ঈদ নামাজের অন্যতম অনুষঙ্গ আতর ও টুপি। ঈদ উপলক্ষে নগরে বেড়েছে গন্ধবণিকদের ব্যবসা। ঈদ প্রস্তুতির শেষ পর্যায়ে দেশি-বিদেশি আতর-টুপি কেনায় ব্যস্ত সবাই। টুপি, আতর আর পারফিউমের দোকানগুলোতে তাই উপচেপড়া ভিড়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, জমজমাট এ বেচাকেনা চলবে চাঁনরাত পর্যন্ত।
মঙ্গলবার (৪ জুন) নগরের রিয়াজউদ্দিন বাজার, জেল রোড আমানত শাহ মাজার, নিউমার্কেট ও কাজীর দেউড়ি ঘুরে দেখা গেছে, ঈদ উপলক্ষে সুগন্ধি পণ্যের বিকিকিনি এ মুহূর্তে জমজমাট। বিক্রেতারা জানান, ঈদ নামাজের প্রস্তুতির রেওয়াজ হিসেবে ক্রেতারা এসব পণ্য কেনেন। এটা চলে চাঁন রাত পর্যন্ত।
রিয়াজউদ্দিন বাজার তামাকুমণ্ডী লেইনের মিসকাত ট্রেডিংয়ের ম্যানেজার ইসকান্দর চৌধুরী আতরের পসরা সাজিয়ে ক্রেতা আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছিলেন। তিনি জয়নিউজকে জানালেন, দুবাইয়ের মাউয়াজ ট্রেডিং এলএলসি হলো তাদের মূল ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান। সেখান থেকেই আনা হয়েছে আতর। এর পাশাপাশি আরও কয়েক দেশের আতর এখানে রয়েছে। এরমধ্যে বস, স্যানেল, খ্রিষ্টান ডিউর, গুচ্চি, টমি, পোলো ও এরাবিয়ান উদ অন্যতম। এছাড়া জান্নাতুল ফেরদৌসসহ আছে বেলি, রজনীগন্ধা, হাসনাহেনা, জুঁইসহ নানান ফুলের সুগন্ধিযুক্ত আতর।
তিনি জানান, ক্রেতাদের মধ্যে দুবাই, ভারত, সৌদি আরব ও ফ্রান্সের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের আতরের কদর বেশি। এমন হরেক পদের একেকটি আতরের শিশির দাম সর্বনিম্ন ২০০ থেকে সর্বোচ্চ ৯ হাজার টাকা পর্যন্ত।
এই দোকানে আতর কিনতে আসা তৌহিদুল ইসলাম জয়নিউজকে বলেন, প্রতি ঈদে এখানে আব্বুর সঙ্গে আতর কিনতে আসি। এবার একাই এসেছি। এখানে ভালোমানের আতর পাওয়া যায়। আর দামও নাগালের মধ্যে।
জেলরোড আমানত শাহ মাজার এলাকার দোকানগুলোতে পাকিস্তানি ও ভারতীয় সুরমার পাশাপাশি মিলছে দেশি সুরমা। রয়েছে অ্যালকোহলমুক্ত দেশি-বিদেশি সুরমাও। পাকিস্তানি হাশেমি সুরমা ১০০ থেকে ১২০ টাকা, রতিফ সুরমা ৫০ থেকে ৭০ টাকা, ভারতীয় খোজতি সুরমা ৬০ টাকা ও মোমিরা ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর দেশি সুরমা দানিসহ ৬০ থেকে ১৪০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
এখানকার দোকানগুলোতে দুবাই, তুরস্ক, পাকিস্তান ও সৌদি আরবের জায়নামাজ ৩০০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। দেশি জায়নামাজ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩৩০ টাকায়। আর বিভিন্ন তসবি ৩০ থেকে ২৫০ টাকায় মিলছে।
আমানত শাহ মাজার এলাকার একটি দোকানে জায়নামাজ আর সুরমা পছন্দ করছিলেন দুই নম্বর গেট এলাকার বাসিন্দা ওমর ফারুক। তিনি জয়নিউজকে বলেন, বাসার সবার জন্য কেনাকাটা শেষ। কেবল নিজের জন্য সুরমা ও জায়নামাজ কিনতে এসেছি।
কাজীর দেউড়ির সুইস এরাবিয়ানের ম্যানেজার মো. শাওন জয়নিউজকে বলেন, আমাদের দোকানে অনেক রকমের আতর রয়েছে। এরমধ্যে অন্যতম হলো জান্নাতুল ফেরদৌস, দালাল, মেকে আম্বার, আলফ জোহরা, আমলি, লাইলি ও বুকার। দুবাইয়ের কিছু বিখ্যাত আতর আমাদের এখানে পাওয়া যায়। এরমধ্যে রয়েছে সুইস এরাবিয়ান, এরাবিয়ান উদ, আবদুল সমাদাল আল কোরাইদ।
তিনি আরো বলেন, এখানে সর্বনিম্ন ১০০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৮০০০ টাকার আতর রয়েছে। আমাদের এখানকার সব আতর এলকোহলমুক্ত।
ঈদের নামাজে পাঞ্জাবির সঙ্গে বাহারি সব টুপি পরতে পছন্দ করেন শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে সব বয়সের মানুষ। এ কারণে টুপির কদর এ সময় বেড়ে যায় দ্বিগুণ। কাজীর দেউড়ির সুইস এরাবিয়ানে থরে থরে সাজিয়ে রাখা হয়েছে হরেক রকমের টুপি।
কাশ্মীরি, জর্দানি ও জিন্নাহ টুপিসহ সাদা কাপড়ের সুতির টুপি ৫০ থেকে ২৫০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। নিউমার্কেটের পাশে ফুটপাত ও ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলোতেও বিভিন্ন রঙের টুপি নিয়ে বসেছে বিক্রেতারা।
লালখান বাজার থেকে সুইস এরাবিয়ানে টুপি কিনতে আসা মো. আরমান জয়নিউজকে বলেন, নতুন টুপি পরে ঈদ জামাতে যাব। এখানে অনেক রকমের টুপি রয়েছে।
জয়নিউজ/আরসি