মুমূর্ষু ও জরুরি রোগীদের সেবায় ঈদের দিনও হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করছেন চিকিৎসক, নার্স ও আয়ারা। ঈদে হাসপাতালের রোগী ও সেবাদানকারী কর্মীদের সময় কাটে কাজের মাঝে। অনেকে ছুটিতে চলে যাওয়ায় যারা দায়িত্বে থাকেন তারাই বাড়তি চাপ সামলান দ্বিগুণ পরিশ্রম করে।
নগরের জেমিসন রেড ক্রিসেন্ট মাতৃসদন হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায় ঈদের দিনও রোগীদের সেবা দিতে ব্যস্ত ডাক্তার ও নার্সদের। রোগীর সংখ্যা কিছু কম থাকলেও মুর্মর্ষু রোগীদের চিকিৎসা বন্ধ রাখার কোনো উপায় নেই।
জেমিসন রেড ক্রিসেন্ট মাতৃসদন হাসপাতালের ডা. প্রিয়াংকা চৌধুরী জয়নিউজকে বলেন, মানবতার সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসকদের ঈদ ও পূজা বলে কিছু নেই। ঈদ হলেও কী করব আজকে আমাদের অন ডিউটি। আমার বাড়ি রাঙামাটিতে। ঈদ মানে তো আনন্দ। সবার সঙ্গে সময় কাটানো। কিন্তু কী করব এটা আমার দায়িত্ব যে মানুষের সেবা করা। ডাক্তারদের নীতিতে আছে রোগীদের সেবা করা।
তিনি আরো বলেন, আমি ৭ বছর যাবত ডাক্তারি করছি। আমার ২ ছেলে। যেহেতু আমি নেই বাসায় আমার স্বামী ছেলেদের দেখাশুনা করছে।
এদিকে নার্স তন্দ্রা চাকমা জয়নিউজকে বলেন, পরিবার-পরিজনের জন্য সবারই মন কাঁদে। আমাদেরও কাঁদে। তবে এই ভেবে ভালো লাগে যে, দেশের জন্য কাজ করতে গিয়ে আনন্দ ত্যাগ করছি।
তিনি আরো বলেন, আমার বাড়ি খাগড়াছড়িতে। আমার পরিবারে মা-বাবা এক ভাই এবং বোন আছে। পরিবারের সবাই চায় বন্ধের দিনগুলোতে একসঙ্গে কাটাতে। কিন্তু চাইলে তো আর যাওয়া যায় না। আমারও একটা দায়িত্ব আছে।
ঈদের ছুটি বঞ্চিত ডা. নাসরিন আক্তার জয়নিউজকে বলেন, একদল মেধাবী পেশাজীবীদের নিয়ে যে সমৃদ্ধ স্বাস্থ্যব্যবস্থা আমাদের পূর্বপুরুষেরা গড়ে রেখে গেছেন তার ধারা অব্যাহত রাখতেই হবে। মানুষের জন্য, জীবনের জন্য, হাসপাতাল খোলা থাকে, খোলা থাকবে।
তিনি বলেন, পবিত্র এই ঈদের দিনেও এক ঝাঁক ডাক্তার-নার্স নিজের প্রিয় মানুষের কথা ভুলে হাসপাতালে থাকবেন, এই যাপিত জীবন অসামান্য গর্বের, মানুষের পাশে থাকার এ সুযোগ অনেক প্রশান্তির।
ডাক্তার ও নার্সদের পাশাপাশি ঈদের দিনও কাজ করছে হাসপাতালের আয়ারা।
জয়শ্রী নামে একজন আয়া জয়নিউজকে বলেন, ঈদের দিন ছেলে-মেয়েদের পরিবারে সঙ্গে সময় কাটাতে ইচ্ছে হয়। কিন্তু আমার তো একটা দায়িত্ব আছে। হাসপাতালে ময়লা থাকলে রোগীদের যেমন সমস্যা হয় তেমনি ছোট্ট বাচ্চাদেরও ক্ষতির কারণ হয়। তাই ঈদের দিনেও কাজ করছি নির্দ্বিধায়।