তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি খালেদা জিয়াকে ইউনাইটেড বা অন্য কোন হাসপাতালে সরানোর পরিকল্পনা করছে। এদিকে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে পেট্রোল বোমাসদৃশ বোতল উদ্ধার করা হয়েছে। তাই এই ‘বোমা’ উদ্ধারের সঙ্গে বিএনপির কোনো যোগসূত্র আছে কি-না তা তদন্ত করে দেখা দরকার।
শনিবার (৮ জুন) বিকেলে নগরের দেওয়ানজী পুকুর পাড়ের বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনের তৃতীয় তলার রেজিস্ট্রারের কক্ষের সামনে থেকে বৃহস্পতিবার (৬ জুন) পেট্টোল বোমাসদৃশ একটি বোতল উদ্ধার করে পুলিশ।
হাসপাতালের অন্য ভবনের কেবিন ব্লকের ৬২১ নম্বর কক্ষে কারাবন্দি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বোমাসদৃশ বোতল উদ্ধারের পেছনে ‘ওপর মহলের নীলনকশা’রয়েছে বলে অভিযোগ করছেন বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী।
এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, রিজভী আহমেদ কারণে-অকারণে প্রতিদিনই সংবাদ সম্মেলন করেন। এই পেট্রোলবোমার সঙ্গে রিজভী আহমেদরাই ভালো পরিচিত। তার উদ্বিগ্ন হবার কারণ জানি না।
তিনি বলেন, বিএনপির কর্মীরাই ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে মানুষের ওপর পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করেছে। শত-শত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। বাস-ট্রাক পুড়িয়েছে। হাজার হাজার মানুষকে আগুনে ঝলসে দিয়েছে। ঘুমন্ত মানুষের ওপর পেট্রোল বোমা মেরেছে। এখন হাসপাতালে বোমাসদৃশ বস্তু পাওয়াতে বরং আমরা বেশি উদ্বিগ্ন।
তথ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে সবসময় বেগম খালেদা জিয়া বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসা নিবেন না বলা হচ্ছিল। একটি বিশেষ হাসপাতালের কথা তিনি এবং তাদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছিল বারবার। এখন বেগম খালেদা জিয়া বঙ্গবন্ধু মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে না চাওয়ার সঙ্গে এই বোমাসদৃশ বস্তু পাওয়ার যোগসূত্র আছে কি-না সেটি খুঁজে বের করা দরকার।
খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঈদের দিন দেখা করতে না দিয়ে জেল কোড লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এমন অভিযোগের প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, নিজের মতো ব্যাখ্যা না দিয়ে মির্জা ফখরুলের উচিৎ ছিল জেল কোড ভালো করে পড়ে নেওয়া। জেল কোডে বলা আছে উৎসবের দিনে আত্মীয়স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবকে দেখা করতে দিতে হবে। মির্জা ফখরুলসহ দলের উর্ধ্বতন নেতারা খালেদা জিয়ার বন্ধু-বান্ধব নয়, তারা হলেন রাজনৈতিক নেতা বা সহকর্মী। এখানে জেল কোডের কোন লঙ্ঘন হয়নি। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলীয় উর্ধ্বতন নেতারা সেই ক্যাটাগরির মধ্যে পড়ে না। সাতজন আত্মীয়-স্বজনকে দেখা করতে দেওয়া হয়েছে।
বিএনপি নেত্রীকে বিএসএমএমইউ থেকে নিয়ে যাবার জন্যই সেখানে বোমাসদৃশ বস্তু রাখা হয়েছে কি-না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্ন করেন তথ্যমন্ত্রীকে। উত্তরে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, এটা তদন্ত করে দেখা প্রয়োজন আসলে এগুলো কারা রেখেছিল। বেগম খালেদা জিয়াকে তারা সেখানে রাখতে চান না। তারা সবসময় বলে আসছেন ইউনাইটেড হাসপাতাল কিংবা অন্য কোন বেসরকারি হাসপাতালে খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা দিতে হবে। এখন সেখানে পেট্রোল বোমাসদৃশ জিনিস পাওয়ার পেছনে সেটির কোন সংযোগ আছে কি-না তদন্ত করে দেখা প্রয়োজন।