কঙ্কালসার বোলিংয়েই ম্যাচে হেরে বসেছিল বাংলাদেশ। এ যাবতকালে বিশ্বকাপে নিজেদের ‘সেরা’ বাজে বোলিং করার পর ৩৮৭ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে কখনোই কক্ষপথে ছিল না টাইগারদের ইনিংস। নিঃসঙ্গ শেরপার মত একা লড়ে গিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। তার ১২১ রানের ইনিংস শুধু ব্যবধানই কমিয়েছে হারের।
কমালেও কতটাই বা কমাবেন! রেকর্ড রান তাড়ায় বিশ্বকাপে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে ইংল্যান্ডের কাছে ১০৬ রানের বিশাল পরাজয় সঙ্গী হয়েছে বাংলাদেশের। রান তাড়ায় শুরুতেই ফিরে যান সৌম্য। আর্চারের পেসে পরাস্ত হয়ে বোল্ড হওয়ার আগে করেন ২ রান। ২৯ বলে ১৯ রান করে ফিরেছেন তামিম। পরিস্থিতির বিবেচনায় তামিমের ইনিংস ছিল বেশ বেমানান। এরপর সাকিবের সঙ্গে জুটি গড়েন মুশফিক। ভালোই চলছিল এ জুটি। মনের কোণে উঁকি দিচ্ছিল স্বপ্ন। কিন্তু ৪৪ রান করে ফিরে যান মুশফিকও।
আরও পড়ুন: রেকর্ড রান তাড়ায় ব্যাটিংয়ে নামছে বাংলাদেশ
এসেই যেন জিততে হবে এই মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে দ্বিতীয় বলে রশিদকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে শূন্য রানে ফিরেছেন মিঠুন। ক্রিজে নেমে কচ্ছপ গতিতে খেলতে থাকেন রিয়াদ। অপর প্রান্তে সাকিব যখন একের পর বাউন্ডারি হাঁকাচ্ছিলেন, রিয়াদ তখন বল নষ্ট করেই যাচ্ছিলেন। রিয়াদের এ স্লথ ব্যাটিংয়ে চাপে পড়ে যান সাকিব। স্টোকসকে মারতে গিয়ে বোল্ড হয়ে ফেরেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। ফেরার আগে সংগ্রহ করেছেন লড়াকু ১২১ রান।
সৈকত পরিস্থিতি বিবেচনায় খেললেও রিয়াদ ছিলেন সেই কচ্ছপ বৃত্তে। ১৬ বলে ২৬ রান করে ফিরেন যান দর্শকদের মুখে হাসি ফোটানো সৈকত। পরে থামে রিয়াদের ৪১ বলের ২৮ রানের ইনিংস। তারপর আর কেউ বলার মতো স্কোর করতে পারেননি। নির্ধারিত ৫০ ওভারের আগেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। আর্চার ও স্টোকস নিয়েছেন ৩টি করে উইকেট। ম্যাচ সেরা হয়েছেন জেসন রয়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের কোচ চান বাংলাদেশের হার!
এর আগে দিনের শুরুতে ইংল্যান্ডের ইংনিসের শেষ আর শুরু মিলল যেন এক মোহনায়। রয়-বেয়ারস্টো থেকে ওকস- প্ল্যাঙ্কেট ছড়ি ঘুরিয়েছেন বাংলাদেশের বোলারদের ওপর। বেধড়ক ব্যাট চালিয়ে ৫০ ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে ইংলিশরা তোলে ৩৮৬ রান। বিশ্বকাপে এটা ইংলিশদের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ।
শনিবার (৮ জুন) কার্ডিফের ওয়েলসে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন টাইগার দলপতি মাশরাফি। সেঞ্চুরি করেছেন ওপেনার জেসন রয়। ১২১ বলে ১৫৩ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন তিনি। পঞ্চাশোর্ধ ইনিংস খেলেছেন জনি বেয়ারস্টো, জস বাটলার। আর শেষ দিকে ঝড় তুলেছেন লিয়াম প্লাংকেট আর ক্রিস ওকস।
১০ ওভারে ৭১ রান দিয়ে সাকিব কোনো উইকেট পাননি। মাশরাফি ১০ ওভারে ৬৮ রান দিয়ে পান একটি উইকেট। মোস্তাফিজ ৯ ওভারে ৭৫ রান দিয়ে তুলে নেন একটি উইকেট। মেহেদি হাসান মিরাজ ১০ ওভারে ৬৭ রান দিয়ে তুলে নেন দুটি উইকেট। মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ২ ওভারে ২৪ রান দিয়ে উইকেট শূন্য থাকেন। সাইফউদ্দিন ৯ ওভারে ৭৮ রান দিয়ে তুলে নেন দুটি উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ইংল্যান্ড: ৫০ ওভারে ৩৮৬/৬ (রয় ১৫৩, বেয়ারস্টো ৫১, রুট ২১, বাটলার ৬৪, মর্গান ৩৫, স্টোকস ৬, ওকস ১৮*, প্লাংকেট ২৭*; সাকিব ১০-০-৭১-০, মাশরাফি ১০-০-৬৮-১, সাইফ ৯-০-৭৮-২, মুস্তাফিজ ৯-০-৭৫-১, মিরাজ ১০-০-৬৭-২, মোসাদ্দেক ২-০-২৪-০)
বাংলাদেশ: ৪৮.৫ ওভারে ২৮০ (তামিম ১৯, সৌম্য ২, সাকিব ১২১, মুশফিক ৪৪, মিঠুন ০, মাহমুদউল্লাহ ২৮, মোসাদ্দেক ২৬, সাইফ ৫, মিরাজ ১২, মাশরাফি ৪*, মুস্তাফিজ ০; ওকস ৮-০-৬৭-০, আর্চার ৮.৫-২-২৯-৩, প্লাংকেট ৮-০-৩৬-১, উড ৮-০-৫২-২, রশিদ ১০-০-৬৪-১, স্টোকস ৬-১-২৩-৩