একরকম নিরুত্তাপভাবেই মঙ্গলবার (১১ জুন) কাপ্তাইয়ের কর্ণফুলী পেপার মিলস (কেপিএম) লিমিটেডের সিবিএ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
এবারের নির্বাচনে বিগত দিনের তুলনায় নির্বাচনি প্রচারণা নেই বললেই চলে। এই প্রথমবার তেমন প্রচার- প্রচারণা ছাড়াই এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
মিলের বর্তমান তিন শ্রমিক সংগঠনের মধ্যে দুই শ্রমিক সংগঠন নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। সংগঠনগুলো হলো বর্তমান সিবিএ কেপিএম শ্রমিক-কর্মচারী পরিষদ (রেজি.নং-চট্ট-২৬২১) ও কেপিএম এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন (রেজি.নং-চট্ট-০৮)।
তবে কেপিএম ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। মিলের তালিকা অনুযায়ী নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩১১। এরমধ্যে নির্বাচনের আগে ৬ জন শ্রমিক অবসরে যাচ্ছে। অবশিষ্ট ৩০৫ জন শ্রমিক-কর্মচারী তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে বলে মিলের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে।
জানা গেছে, কেপিএমে কয়েক বছর ধরে অর্থ সংকট বিরাজ করছে। নিয়মিত শ্রমিক,কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের বেতন- ভাতা পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। কর্মজীবীদের অনেক টাকা বকেয়া পড়ে আছে। প্রায় ২-৩ শ’ অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক- কর্মচারীর জমা টাকা দিতে পারছেন না কর্তৃপক্ষ।
এ অবস্থায় সিবিএ নির্বাচনে নেতৃত্ব বাছাইয়ে কর্মজীবীরা অনেক চিন্তা-ভাবনা করছেন বলে জানা গেছে।
মিলের কয়েকজন শ্রমিক- কর্মচারীর সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, কর্মজীবীরা এমন নেতাদের সিবিএ নেতা হিসেবে নির্বাচিত করতে চান, যারা অন্তত নিয়মিত তাদের বেতন-ভাতা আদায় করে দিতে পারবেন।
মিলের দৈন্যদশা কাটিয়ে মিলকে কিভাবে উৎপাদনমুখী করে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করতে পারেন এমন অভিজ্ঞ নেতৃত্বকেই তারা নির্বাচিত করতে চায়।
সাবেক কয়েকজন শ্রমিক জয়নিউজকে জানান, এক সময় কেপিএমে সিবিএ নির্বাচন এলে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দম ফেলার সুযোগ থাকত না। তখন ভোটার সংখ্যাই ছিল ৩-৪ হাজার। আর সিবিএ নির্বাচনকে ঘিরে তখন শ্রমিক সংগঠনগুলোর মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ লেগেই থাকত। তবে সেসব দিন এখন আর নেই।
এদিকে, নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে মিল কর্তৃপক্ষ ও উপজেলা প্রশাসন বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানান কেপিএমের জিএম (প্রশাসন) একরাম উল্লাহ খন্দকার।
তিনি জয়নিউজকে বলেন, ইতোমধ্যে নির্বাচনি আচরণবিধি মেনে চলার জন্য কেপিএম গেস্ট হাউজে প্রশাসন, মিল কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিক নেতাদের উপস্থিতিতে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সর্বশেষ মিলের আর্থিক সংকটের কারণে কেপিএম থেকে ২০১৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৭-৮ শ’ শ্রমিক,কর্মচারী ও কর্মকর্তাকে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে। ফলে শ্রমিক- কর্মচারীর সংখ্যা এখানে একেবারেই কমে গেছে।