ঈদের পাঁচদিন অতিবাহিত হওয়ার পরও হাটহাজারী উপজেলার তিনটি মহাসড়কে বাস ও সিএনজি অটোরিকশায় অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ঈদ বকশিসের নামে দুই পার্বত্য জেলার অন্যতম চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি-রাঙামাটি ও চট্টগ্রাম-কাপ্তাই মহাসড়কের ৩০ রুটে এখনও যাত্রীদের জিম্মি করে দুই থেকে তিনগুণ বেশি ভাড়া আদায় করছে পরিবহন শ্রমিকরা।
এতে যাত্রীসাধারণের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। পরিবহন শ্রমিকদের বাড়ানো টাকা দিতে না পারলে যাত্রীদের গাড়িতে তোলা হচ্ছে না। এ নিয়ে মহাসড়কগুলোতে পরিবহন শ্রমিকদের সঙ্গে যাত্রীদের বাকবিতণ্ডা এমনকি হাতাহাতির ঘটনাও ঘটছে।
মো. আরিফুল ইসলাম নামে এক যাত্রী জয়নিউজকে বলেন, চৌধুরীহাট যাওয়ার উদ্দেশে তিনি সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত প্রায় আধঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও কোনো গাড়ি পাননি। চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি, চট্টগ্রাম-নাজিরহাট, চট্টগ্রাম-ফটিকছড়ি পরিবহনসহ বেশ কয়েকটি গাড়িতে ওঠার চেষ্টা করলেও সবক’টি বাস ও সিএনজি অটোরিকশা ঈদ বকশিসের নাম দিয়ে অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করছে।
এসময় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে কেউই কোনো ব্যবস্থা নেন না। ফলে গাড়িচালকরা এক প্রকার বেপরোয়া হয়ে যাত্রীদের জিম্মি করে ফেলেছে।
সরেজমিনে ঘুরে খবর পাওয়া গেছে, সিএনজি অটোরিকশা চালকরাও যাত্রীদের কাছ থেকে তিনগুণ বেশি ভাড়া আদায় করছে। কলেজ গেট থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ১নং সড়ক পর্যন্ত ভাড়া ১০ টাকা। কিন্তু ঈদ উপলক্ষে ভাড়া আদায় করছে ২০ থেকে ৩০ টাকা।
রবি চৌধুরী নামে এক ব্যক্তি জয়নিউজকে বলেন, সিএনজি চালকরা ঈদের বকশিসের নামে বেপরোয়া চাঁদাবাজি করছে। ১২০ টাকা ভাড়া ঈদ উপলক্ষে ১৫০ টাকা নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা ভাড়া কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না।
অন্যদিকে বড়দিঘীর পাড় বাসিন্দা শারমিন আক্তার জয়নিউজকে বলেন, গাড়িচালকরা যাত্রীদের জিম্মি করে ফেলেছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, বাস না পেয়ে বিরক্ত হয়ে কয়েকজন মিলে সিএনজি অটোরিকশা যোগে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে দেখলাম নৈরাজ্য সেখানেও। মুরাদপুর পর্যন্ত প্রত্যেকটি সিএনজি অটোরিকশা ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা ভাড়া চাইছে। অথচ সর্বোচ্চ ৩শ’ টাকা ভাড়ায় প্রতিদিন চলত ওরা। ঈদ শেষ হয়ে গেলেও তাদের নৈরাজ্য শেষ হয়নি।
পরিদর্শনকালে হাটহাজারী বাসস্ট্যান্ড এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বাসস্ট্যান্ড থেকে রাউজান সদর পর্যন্ত যেতে একজন যাত্রীর কাছ থেকে ৭০-৮০ টাকা আদায় করছেন সিএনজি অটোরিকশাগুলো। যাত্রীরা নিরুপায় হওয়ায় লোকাল বাসগুলোও একই কাজ করে চলেছে।
অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে অনেক যাত্রীর সঙ্গে চালকদের বাগবিতণ্ডা এমনকি হাতাহাতিও করতে দেখা গেছে। এ অবস্থায় ছুটি শেষে কর্মস্থলমুখী অসংখ্য যাত্রী চালকদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন। তারা এ থেকে মুক্তি পেতে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।