ভারতের গোয়ার এক গ্রাম ‘কারদি’। বছরের ১১ মাস পানির নিচে থাকে গ্রামটি!
কারদি যখন এক মাসের জন্য যখন পানির উপর ভেসে উঠে তখন সেখানকার বাসিন্দারা তাদের ভিটেতে ফিরে যায়।
ঘটনার শুরু ১৯৮৬ সালে। তখন থেকেই এই গ্রামের বাসিন্দারা জানতেন যে গ্রামটির আর কোনো চিহ্ন থাকবে না।
ওই বছরই গোয়া প্রদেশে প্রথম বাঁধ নির্মাণ করা হয় এবং এর পরিণতিতে গ্রামটি সম্পূর্ণ পানিতে নিমজ্জিত হয়ে যায়। অথচ এটি এক সময় দক্ষিণ-পূর্ব গোয়ার সমৃদ্ধশালী গ্রাম ছিল।
প্রতিবছর মে মাসে পানি সরে গেলে দেখা যায় কি কি রয়েছে কারদিতে। কাদামাটি, গাছের গুড়ি, ক্ষয়প্রাপ্ত ঘরবাড়ি, ভেঙে পড়া ধর্মীয় উপাসনালয়, গৃহস্থালির নানা জিনিস আর পরিত্যক্ত বিরান ভূমি।
তিন হাজার মানুষের বসতি ছিল গ্রামটিতে। এই গ্রামের জমিতে ফলন বেশি হয় এমন কথারও প্রচলন ছিল। ধানচাষ, আর গ্রামকে ঘিরে রাখত নারকেল গাছ, ক্যাসুনাট, আম আর কাঁঠাল গাছ।
হিন্দু, মুসলমান এবং খ্রিস্টান তিন ধর্মের মানুষ কারদিতে বসবাস করতো। কিন্তু দৃশ্যপট নাটকীয়ভাবে বদলে গেল যখন ১৯৬১ সালে গোয়া পর্তুগীজদের থেকে স্বাধীন হয়ে গেল।
প্রথম মূখ্যমন্ত্রী গ্রামবাসীদের খবর দিলেন, যদি প্রদেশের প্রথম এই বাঁধটি করা হয় তাহলে দক্ষিণ গোয়ার সবাই উপকৃত হবে। কারদির সবাইকে পাশের গ্রামে সরিয়ে নেওয়া হয় আর প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়, সেখানে অনেক সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে।
কারদিবাসীদের ভূমি এবং ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। তবে এই বাঁধ থেকে পানি ওই গ্রাম পর্যন্ত পৌঁছায়নি যেখানে তাদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এরপরও কারদি’র বাসিন্দারা প্রতীক্ষায় থাকেন মে মাসের।
যখন পানি নেমে যায় তখন তারা তাদের হারিয়ে যাওয়া গ্রামে ফিরে যান। নিজের ঘরবাড়ির ধংসাবশেষ দেখেন। ভেঙ্গে পড়া প্রার্থনালয়ে প্রার্থনা করেন। আর স্মৃতিচারণ করেন।