অপরাধী প্রত্যার্পণ আইনের বিরুদ্ধে হংকংয়ের পথে নেমেছে লাখো মানুষ। সোমবারও চলছে বিক্ষোভ। নতুন এ আইন অনুযায়ী চীন চাইলে সন্দেহভাজন অপরাধীদের নিজ ভূখণ্ডে নিয়ে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে পারবে।
ডেমোক্রেটিক পার্টির অভিজ্ঞ আইনপ্রণেতা জেমস শহরের সংসদের সামনে উপস্থিত জনতার উদ্দেশে বলেন, ‘এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে তাঁকে (ক্যারি ল্যাম) পদত্যাগ করতে হবে। গোটা হংকং তাঁর বিরুদ্ধে অবস্থান করছে।’
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত হাজার হাজার মানুষ হংকংয়ের রাজপথে জড়ো হচ্ছে। ভোররাতের দিকে মিছিল বের করার সিদ্ধান্ত নেয় বিক্ষোভকারীরা। তাদের সংখ্যার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে পুলিশের সংখ্যা।
আন্দোলনকারীরা রাস্তায় বিভিন্ন দাবিসংবলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভ করছে। হুইলচেয়ারে করেও অনেকে বিক্ষোভে যোগ দিয়েছে, যাদের সহায়তা করছে অন্য আন্দোলনকারীরা। সব মিলিয়ে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে আন্দোলনে নামলেও অনেকেই ঠিক পুরোপুরি আশাবাদী নয়। কারণ, হংকংয়ের আইনসভায় বেইজিংপন্থীরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ।
আন্দোলনকারীরা সহিংস হামলার প্রস্তুতি নেয়। বারবার সতর্ক করার পরও তাদের শান্ত করতে ব্যর্থ হয়ে মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে পুলিশ।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের কর্মকর্তারা আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে হুঁশিয়ার বার্তা জানিয়েছেন। এর কারণে হংকংয়ের আইনসংক্রান্ত নীতিমালা পরিবর্তিত হতে পারে বলে ধারণা করছেন তাঁরা। আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ী মহল এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলোও একই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
যে আইন নিয়ে এ আন্দোলন, সেখানে বলা হয়েছে, বেইজিং, ম্যাকাও ও তাইওয়ান থেকে পালিয়ে আসা কোনো অপরাধীকে ফেরত চাইলে তাকে ফেরত দিতে হবে; বিশেষত যেসব অপরাধীর বিরুদ্ধে হত্যা ও ধর্ষণের মতো অভিযোগ রয়েছে। তবে হংকংয়ের কর্তৃপক্ষ বলছে, এ আইন নিয়ে এত দুর্ভাবনার কিছু নেই। কারণ, এ অপরাধী প্রত্যার্পণ অনুরোধে সাড়া দেওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তটি হংকংয়ের বিচার বিভাগই নেবে। এ আইনের ফলে চীনা বিচারব্যবস্থার অধীনে অন্যায্যভাবে আটক ও বিচারের মুখোমুখি হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেড়ে যাবে বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা।