তরুণীর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন

নরসিংদীর বীরপুরের বর্মণপাড়ায় ফুলন রানী বর্মণ (২০) নামে এক তরুণীর শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়েছে দুই দুর্বৃত্ত। ফুলন এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন।

- Advertisement -

বৃহস্পতিবার ( ১৩ জুন) রাতে এ ঘটনা ঘটে। ফুলন পৌর এলাকার বীরপুরের যুগেন্দ্র বর্মণের মেয়ে।

- Advertisement -google news follower

পুলিশ ও ফুলনের পরিবারের সদস্যরা জানান, সন্ধ্যার পর শাজাহান মোক্তার নামে ফুলনের বাবার এক সহকর্মী কাজের সূত্রে তাদের বাড়িতে আসেন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে ফিরে যাওয়ার সময় তার সঙ্গে কেক কিনতে যান ফুলন। কেক কিনে ও মোবাইল ফোনে রিচার্জ করে রেললাইন পার হয়ে বাড়ির গলির মুখে পৌঁছার পর চলে যান শাজাহান মোক্তার। নির্জন আর অন্ধকার গলি ধরে একা বাড়িতে ফিরছিলেন ফুলন।

বাড়ির কাছে চলে আসার পর দুই দুর্বৃত্ত ফুলনের হাত ও মুখ চেপে ধরে খোলা একটি জায়গায় নিয়ে আসে। দুর্বৃত্তদের একজন তাঁর মুখ চেপে ধরে রাখে, আর অন্যজন তাঁর শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় ফুলনের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।

- Advertisement -islamibank

এসময় তাকে নরসিংদী হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

এ ঘটনায় সঞ্জীব রায় নামের সন্দেহভাজন একজনকে আটক করেছে পুলিশ। সঞ্জীব ফুলনের বড় ভাইয়ের শ্যালক। সঞ্জীব রায়পুরা থানার মিলন মন্দির এলাকার ননী গোপাল রায়ের ছেলে।

পুলিশের গোয়েন্দা শাখার উপপরিদর্শক আবদুল গাফফার বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) রাতেই রায়পুরায় অভিযান চালিয়ে সঞ্জীবকে আটক করা হয়।

এ বিষয়ে ফুলন জানান, কেক কিনে অন্ধকার গলি দিয়ে বাড়িতে ফেরার সময় দাঁড়িয়ে থাকা দুজনকে সিগারেট খেতে দেখেন তিনি। এ সময় একটু ভয় পেয়ে দ্রুত পা চালান ফুলন। কিন্তু ওই দুজন দৌড়ে গিয়ে তার মুখ চেপে ধরে শরীরে কেরোসিন ঢেলে দেয়। এরপর দেশলাইয়ের কাঠি জ্বেলে তার দিকে ছুড়ে দেওয়া হয়। আগুন ধরে যাওয়ার পর চিৎকার করতে থাকলে তারা পালিয়ে যায়। অন্ধকারে তাদের চিনতে পারেননি ফুলন।

নরসিংদী হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. নাসিম আল ইসলাম জানান, ফুলনের শরীরের ২০ ভাগের বেশি পুড়েছে। দাহ্য পদার্থ দিয়ে তাকে পোড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছে। তার দুই বাহু ও পেছনের অংশ বেশি পুড়েছে।

অবস্থা সংকটপূর্ণ হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

নরসিংদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দুজ্জামান জানান, কারা কী কারণে ফুলনের গায়ে আগুন দিল, কিছুই বলতে পারছে না তার পরিবার। ঘটনাস্থল থেকে দাহ্য পদার্থের বোতল, ম্যাচ, মেয়েটির পুড়ে যাওয়া চুলসহ বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। কিনে আনা ওই কেকও ঘটনাস্থলে পড়ে ছিল। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।

পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন আহমেদ জানান, এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকটি বিষয় মাথায় রেখে আমরা তদন্ত শুরু করেছি। খুব দ্রুত অপরাধীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করছি।

জয়নিউজ/বিআর
KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ