বৃহস্পতিবার দুপুর গড়িয়ে বিকেল। হাটহাজারী উপজেলার ২ নম্বর ধলই ইউনিয়নের পশ্চিম ধলই গ্রামের হিম্মৎ চৌধুরী বাড়ির ষাটোর্ধ্ব কৃষক মো. হাসেম বসতঘর থেকে বের হন। উদ্দেশ্য বাড়ির পাশের জমি থেকে তার গৃহপালিত গরুর জন্য ঘাস কাটা। সন্ধ্যা নাগাদ কাটা ঘাস নিয়ে বাড়ি ফেরেন ওই কৃষক।
এসময় তার আপন ছোট ভাই মো. কাশেমের গরু ঘাসগুলো খেয়ে ফেলে। এ ঘটনায় মো. হাসেম গালমন্দ করলে তার ছোট ভাইয়ের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তার (ভাইপোদের সঙ্গে জ্যাঠার) কথা কাটাকাটি হয়। রাত হয়ে যাওয়ায় সাময়িকভাবে এ ঘটনার সুরাহা হলেও ঘটনার শেষ কিন্তু সেখানেই নয়।
পরদিন শুক্রবার (১৪ জুন) সকালে তুচ্ছ এ ঘটনার রেশ ধরে দুই ভাইপো কাসেমের ছেলে সাগর (২৩) ও সজীব (১৮) তাদের আত্মীয়-স্বজনদের নিয়ে কৃষক মো. হাসেমের ওপর মধ্যযুগীয় কায়দায় শুরু করে নির্মম নির্যাতন। একপর্যায়ে তাকে মাটিতে ফেলে গরুর রশি দিয়ে হাত-পা ও কোমর বেঁধে উপর্যুপরী কিল-ঘুষি ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে শরীরের নানাস্থানে মারাত্মকভাবে জখম করে।
এসময় স্থানীয় লোকজন বৃদ্ধের চিৎকার শুনে এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় জনতা মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে দ্রুত উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে।
এ ব্যাপারে হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মাহতাব জয়নিউজকে জানান, স্থানীয় কিছু লোক রক্তাক্ত ও মুমূর্ষু অবস্থায় হাসেম নামে এক বৃদ্ধকে নিয়ে আসে। তার অবস্থার অবনতি দেখে স্যালাইন দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য আমরা তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে প্রেরণ করেছি।
রাত সাড়ে ৯টায় ওই এলাকার ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম মুঠোফোনে জয়নিউজকে জানান, বৃদ্ধ কৃষক মো. হাসেমের দুই ছেলে দেশের বাইরে থাকেন। তার স্ত্রীরও সম্প্রতি অপারেশন হয়েছে। এ সুযোগে একা পেয়ে তুচ্ছ ঘটনার রেশ ধরে তাকে বেধড়ক পিটিয়েছে ভাইপোরা। বর্তমানে তিনি চমেক হাসপাতালের ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার অবস্থা সংকটাপন্ন।
হাসেমের অপর ছোট ভাই বাবু জয়নিউজকে বলেন, একা পেয়ে আমার বড় ভাইকে অপর ভাইয়ের ছেলেরা রশি দিয়ে বেঁধে পিটুনি দিয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযুক্ত ভাইপো সাগরের মুঠোফোনে ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
অন্যদিকে এ ঘটনায় কৃষক হাসেমের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।