বিশ্বকাপ আসলেই কী যেন হয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকার। অনেক আশা নিয়ে চলতি ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে আসলেও দলটি রয়ে গেছে আগের বৃত্তেই। একের পর এক হারতে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকা এবার হেরেছে পাকিস্তানের কাছে।
লন্ডনের লর্ডসে নিজেদের সপ্তম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা ৪৯ রানে হেরেছে পাকিস্তানের কাছে। সরফরাজ বাহিনীর দেওয়া ৩০৯ রানের জবাব দিতে নেমে প্রোটিয়ারা ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে করে ২৫৯ রান।
রান তাড়ার শুরুতেই উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। দলীয় ৪ রানে হাশিম আমলাকে (২) এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে সাজঘরে ফেরান মোহাম্মদ আমির।
আমলাকে হারানোর ধাক্কাটা সামাল দেন ওপেনার কুইন্টন ডি কক ও অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসিস। দু’জন মিলে গড়েন ৮৭ রানের জুটি। সেই জুটি ভাঙেন শাদাব খান। ইমাম-উল-হকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ডি কক ফেরেন ৪৭ রান করে।
এর পরপরই ফিরেন এইডেন মার্করাম (৭)। খাদ থেকে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন ডু প্লেসি। কিন্তু তার ইনিংসটা বড় করতে দেননি আমির। ডু প্লেসিকে (৬৩) শিকার করে ২০১৯ বিশ্বকাপের উইকেট শিকারিদের তালিকায় শীর্ষে উঠেছেন আমির।
এরপর দলের হাল ধরতে চেষ্টা করেন রসি ফন ডার সার ডুসেন এবং ডেভিড মিলার। দু’জনের ৫৩ রানের জুটি ভাঙেন শাদাব। দলীয় ১৮৯ রানে মোহাম্মদ হাফিজের তালুবন্দী হন ডুসেন (৩৬)। পরের ওভারে মিলারকে (৩১) সরাসরি বোল্ড করেন শাহিন আফ্রিদি।
এরপর আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি প্রোটিয়ারা। আন্দিলে ফেলুওকাওয়াও চেষ্টা করেছেন যতটুকু সম্ভব দলের রানটা বাড়ানোর। শেষ পর্যন্ত তিনি অপরাজিত থাকেন ৪৬ রানে। অন্যপ্রান্তে ওয়াহাব রিয়াজের তোপে ফেরত যান ক্রিস মরিস (১৬), কাগিসো রাবাদা (৩) ও লুঙ্গি এনগিডি (১)। এক রানে অপরাজিত থেকে শেষ পর্যন্ত ফেলুকাওয়াওকে সঙ্গ দেন ইমরান তাহির।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ৩০৮ রান সংগ্রহ করে পাকিস্তান।
জিততেই হবে ম্যাচে পাকিস্তানের শুরুটা হয় দুর্দান্ত। ফখর জামান ও ইমামের ওপেনিং জুটিতে স্কোরবোর্ডে ওঠে ৮৮ রান। এই জুটি ভাঙেন তাহির।
ফখরকে (৪৪) আমলার হাতে ক্যাচ বানান তাহির। পরে ইমামকেও (৪৪) ঘূর্ণিতে কাবু করেন তিনি। এরপর মার্করামের এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন হাফিজ (২০)।
জোড়া শিকারে একটি রেকর্ড গড়েছেন তাহির। বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি এখন তিনি। ৩৯ উইকেট নিয়ে পেছনে ফেলেছেন অ্যালান ডোনাল্ডকে। পাকিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে ৩৭ উইকেট ছিল তাহিরের।
পাকিস্তানকে বড় সংগ্রহের পথে নেতৃত্ব দেন বাবর আজম ও হারিস সোহেল। দু’জনে মিলে গড়েন ৮১ রানের জুটি। বাবর তুলে নেন ২০১৯ বিশ্বকাপে তার দ্বিতীয় ফিফটি। তবে ইনিংসটি বড় করতে পারেননি তিনি। ৬৯ রানের মাথায় তাকে ফেরান ফেলুকাওয়াও।
এরপর ইমাদ ওয়াসিমকে নিয়ে বাকি কাজ সারেন সোহেল। তার ব্যাটে ভর করে তিনশ পেরোনো সংগ্রহ পায় পাকিস্তান। শেষ দিকে সেঞ্চুরি থেকে ১১ রান দূরত্বে থাককে সোহেলকে থামান এনগিডি। তার ৫৯ বলে ৮৯ রানের ইনিংসটি সাজানো ছিল ৩ ছক্কা ও ৯ চারে।
অবশ্য সোহেলের আগে ইমাদকে (২৩) ফেরান এনগিডি। ওয়াহাব রিয়াজকে (৪) নিজের তৃতীয় শিকার বানান এই প্রোটিয়া পেসার। শেষ দিকে অধিনায়ক সরফরাজ (২) ও শাদাব (১) অপরাজিত ছিলেন।
এই জয়ে ৬ ম্যাচে ৫ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার সাতে উঠে এসেছে পাকিস্তান। সমান পয়েন্ট পেলেও নেট রান রেটে পিছিয়ে থাকায় তারা আছে বাংলাদেশের চেয়ে একধাপ পেছনে।
অন্যদিকে হেরে সেমিফাইনালের স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে প্রোটিয়াদের। ৭ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট মাত্র ৩।