বাংলায় একটি প্রবাদ আছে, ‘বারে বারে ঘুঘু তুমি খেয়ে যাও ধান, এবার ঘুঘু তোমার বধিব পরাণ’। প্রবাদটির মর্মার্থ অনুযায়ী প্রায় যে কিনা কাজী না হয়েও কাজীর পরিচয়ে দুই শতাধিক বিয়ে নিবন্ধন করেছেন। এমনকি রেজিস্ট্রিও করেছেন, দিয়েছেন কাবিননামাও।
তিনি গ্যারান্টি সহকারে বাল্য বিয়ে, ভুয়া বিয়ে, কন্ট্রাক্ট বিয়েসহ নানারকম ঝামেলার বিয়ে পড়িয়েছেন ২০০টির মত। বিয়ে পড়িয়েছেন কাজী তপন কান্তি নাথ ওরফে মো. হাসান (৪২)।
ঘুঘুর মত ওই ভুয়া কাজী মো. হাসান বারে বারে এমন কাজ করে গেলেও অবশেষে তবে তার শেষ রক্ষা হয়নি।
রোববার (৩০ জুন) দিবাগত রাত ১১টার দিকে হাটহাজারী পৌরসভার মেডিকেল গেইটের উত্তর পার্শ্বে ওয়াপদা (বিদ্যুৎ) অফিসের পশ্চিমে ইদ্রিস ভবনে বিয়ে পড়ানোর সময় তাকে হাতেনাতে পাকড়াও করলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রুহুল আমীন।
মো. হাসান বিগত কয়েক বছর আগে ধর্মান্তরিত হয়ে মুসলমান ধর্ম গ্রহণ করেন। তিনি পৌরসভার মীরের খীল গ্রামের নাথপাড়া হরিপদ নাথের ছেলে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ইউএনও রুহুল আমীন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জয়নিউজকে বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মেডিকেল গেটের উত্তর পার্শ্বে ওয়াপদা (বিদ্যুৎ) অফিসের পশ্চিমে ইদ্রিস ভবনের নীচতলার একটি কক্ষে ভুয়া কাজী মো. হাসান তার সহকারী পরিচয়ে পার্শ্ববর্তী রাউজান পৌরসভা ৫নং ওয়ার্ডের সালামত উল্লাহর বাড়ির মৃত এজহারুল হক মো. এহসান (২৩) নামে এক যুবককে সঙ্গে নিয়ে একটি বিয়ে পড়াচ্ছিল। এ সময় ওই ভুয়া কাজী ও তার সহকারীকে আটক করা হয়েছে।।
তিনি আরও বলেন, ওই ভুয়া কাজী প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন, তারা গত ৭-৮ বছর ধরে ভুয়া বিয়ের ব্যবসা করে আসছে এবং প্রায় ২০০টি বিয়ে পড়িয়েছে। তবে তার কাছ থেকে জব্দকৃত রেজিস্টারে প্রায় ৬৬টি বিয়ের বর-কনের ও সাক্ষীর স্বাক্ষরও রয়েছে।
তবে একটা বিয়েও সরকারি নিয়ম অনুযায়ী সম্পন্ন হয়নি। প্রতি বিয়ের জন্য তারা মোটা অংকের টাকা আদায় করত। তারা মূলত কন্ট্রাকে ভুয়া বিয়েগুলো করাতো যেখানে অল্পবয়সী ও অসহায় মেয়েদের বিয়ের জালে ফাঁসানো হত।
আটককৃত দুইজনকে পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করা হয়েছে।