ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে ‘অতৃপ্ত স্বাধীনতা’কে উপহাস করে স্লোগান দেওয়া হতো- ‘ইয়ে আজাদী ঝুটা হ্যায়, লাখো ইনসান ভুখা হ্যায়’। কিন্তু আজ, ‘ইয়ে আজাদী আচ্ছা হ্যায়, লাখো পাঠক খোশ হ্যায়’।
এই আজাদী, সেই আজাদী নয়। দৈনিক আজাদী, চট্টগ্রামের পত্রিকা। চট্টগ্রামের পত্রিকা হলেও কিন্তু বিশ্বময় তার পাঠক। ইতিহাস আর ঐতিহ্যের চমৎকার মেলবন্ধনের সমন্বয় এই পত্রিকা। যার জন্মদিন আজ (৫ সেপ্টেম্বর)। ১৯৬০ সালের এ দিনে আত্মপ্রকাশ ঘটে আজাদী’র। আজাদী ছাপা হতো আন্দরকিল্লার ঐতিহ্যবাহী কোহিনূর প্রেস থেকে। বাংলাদেশের ছাপাখানার ইতিহাসে কোহিনূর প্রেস একটি মাইলফলক। আজাদীতে হাতেখড়ি হওয়া এমন অসংখ্য সাংবাদিক আছেন যারা মাতাচ্ছেন দেশের সব নামি মিডিয়া হাউজ। অনেকেই আছেন কর্ণধারের পর্যায়েও।
স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম দৈনিক পত্রিকাটির পৃষ্ঠাসজ্জা সম্পূর্ণ লাল রঙে সাজিয়ে ও ‘জয় বাংলা’ শিরোনাম দিয়ে সাংবাদিকতার ইতিহাসে ব্যাতিক্রমী ও ঐতিহাসিক সংস্করণ প্রকাশ করে আজাদী।
ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক পত্রিকাটির প্রথম সম্পাদক ও প্রকাশক। আজাদীর ৫৯তম বছরে পদার্পণ উপলক্ষে বুধবার বিকেলে দৈনিক আজাদী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় মিলাদ মাহফিল। আজাদীর জন্মদিনে সম্পাদক এমএ মালেক বলেন, সুদীর্ঘ অভিযাত্রায় নানা চড়াই–উৎরাই পেরিয়ে আজাদী নিরপেক্ষ ও বিশ্বস্ত সাংবাদিকতায় অটল রয়েছে। সমাজের প্রতি, মানুষের প্রতি দায়িত্ববোধ নিয়ে সবসময় সত্যের পক্ষে আজাদী। তাই আজাদী পাঠকের আস্থা ও ভালোবাসার প্রতীক।
আজাদী তার অনলাইন সংস্করণে জানায়, ৫৮ বছর আগের পারিপার্শ্বিক অবস্থায় সংবাদপত্র প্রকাশের ব্যাপারটি ছিল দুরূহ এবং ঝুঁকিপূর্ণ। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ একটি জনপদ হলেও চট্টগ্রাম ছিল অবহেলিত একটি শহর। নানাভাবে পিছিয়ে থাকা সেই সময়ের চট্টগ্রামের মাটি ও মানুষের কথা বলার জন্য দৈনিক আজাদী যাত্রা শুরু হয়েছিল। তিনি আরও বলেন, আজাদী প্রকাশের উদ্দেশ্য ছিল চট্টগ্রামের মানুষের সমস্যা, সম্ভাবনার কথা তুলে ধরা। প্রকাশনার শুরু থেকে আজাদী দায়িত্বশীলতার সাথে সেই আদর্শ ধরে রেখেছে। আজাদী চট্টগ্রামের কথা বলেছে। এখানকার মানুষের সমস্যা ও সংকটের কথা বলেছে। বলেছে স্বপ্ন ও সম্ভাবনার কথাও। অনেক বাধা–বিপত্তি অতিক্রম করে পত্রিকাটি ক্রমে চট্টগ্রামের মানুষের মুখপাত্র হিসেবে পরিণত হয়েছে। চট্টগ্রামের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন আনায় ভূমিকা রেখেছে। আজাদী ভবিষ্যতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে।