কক্সবাজারের কুতুবদিয়া উপজেলায় কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) প্রকল্পের চাল খোলাবাজারে বিক্রি করে দিয়েছেন এক ইউপি সদস্য। খবর পেয়ে সেই চাল জব্দ করেছে উপজেলা প্রশাসন।
বুধবার (৩ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় সরকারি চাল খোলাবাজারে বিক্রির খবর পেয়ে কুতুবদিয়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুপ্রভাত চাকমা থানার ওসি মো. দিদারুল ফেরদাউসকে সঙ্গে নিয়ে বড়ঘোপ বাজারে অভিযান চালান। অভিযানে বাজারের আক্কাস স্টোর থেকে ৫৪ বস্তা সরকারি চাল জব্দ করে দোকানটি সিলগালা করে দেওয়া হয়। তবে অভিযানের খবর পেয়ে দোকানের মালিক পালিয়ে যান।
কুতুবদিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দিদারুল ফেরদাউস জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কুতুবদিয়া উপজেলা সদরের বড়ঘোপ বাজারের আক্কাসের চালের দোকানে অভিযান চালিয়ে ৫৪ বস্তা সরকারি চাল জব্দ করা হয়েছে। দোকানের মালিক আক্কাসের ভাষ্যমতে, তিনি (আক্কাস) প্রতি কেজি ২৪ টাকা দরে মোট ৫ টন সরকারি চাল ক্রয় করেছেন বড়ঘোপ ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের নাছির মেম্বারের কাছ থেকে। সেখান থেকে ২ টন চাল বিক্রিও করা হয়েছে।
কুতুবদিয়ার সহকারী কমিশনার (এসিল্যান্ড) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুপ্রভাত চাকমা সরকারি চাল খোলাবাজারে বিক্রির সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এ ব্যাপারে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
জানা গেছে, বড়ঘোপ ইউনিয়ন পরিষদের মাঠ ভরাটের জন্য গত অর্থবছরে ৯ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে। ওই প্রকল্পের সভাপতি করা হয় বড়ঘোপ ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আওয়ামী লীগ নেতা নাছির উদ্দিনকে। অভিযোগ উঠেছে, নাছির উদ্দিন প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন না করেই কুতুবদিয়া পিআইও অফিস থেকে পৃথক ডিও নিয়ে গত মাসে ৫ টন চাল উত্তোলন করে নেন। তিনি ইতিপূর্বে ২ টন চাল একইভাবে খোলাবাজারে বিক্রি করে দিয়েছিলেন।
অর্থবছর শেষ হয়ে যাওয়ায় তড়িঘড়ি করেই গত মাসের শেষদিকে পিআইও অফিস থেকে ডিও নিয়ে খাদ্য গুদাম থেকে চাল উত্তোলন করে বড়ঘোপ বাজারের আক্কাস সওদাগরের কাছে বিক্রি করে দেন। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, কাবিখা প্রকল্পের চাল খোলাবাজারে বিক্রি নিষিদ্ধ।
এ ব্যাপারে জানতে বড়ঘোপ ৮নং ওয়ার্ডের সদস্য নাছির উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বড়ঘোপ ইউনিয়ন পরিষদের মাঠ ভরাটের জন্য ৯ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। তিনি নিজের পকেটের টাকা খরচ করে পরিষদের একটি বাথরুম করেছেন।
মাঠ ভরাট না করে পরিষদের বাথরুম কেন করেছেন জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
জয়নিউজ/গিয়াস/আরসি