ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারা বৈধ কি-না তা নিয়ে বৃহস্পতিবার (৬ সেপ্টেম্বর) রায় দিতে পারেন সুপ্রিম কোর্ট। ওই ধারায় সমকামিতাকে অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ধারাটির সাংবিধানিক বৈধতা খারিজ হলে সমকামিতা আর অপরাধ থাকবে না।
ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারার বিরুদ্ধে প্রথম আপত্তি জানায় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা নাজ ফাউন্ডেশন। ২০০১ সালে দিল্লি হাইকোর্টে ওই ধারাকে চ্যালেঞ্জ করে তারা। ২০০৯ সালে দিল্লি হাইকোর্ট রায় দেন, সম্মতির ভিত্তিতে দুই প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে যৌন সম্পর্ক অপরাধ নয়। তাদের যৌন পছন্দ এ ক্ষেত্রে বিবেচনাযোগ্য বিষয়ই নয়। কারণ যৌন পছন্দ যা-ই হোক না কেন, দুই প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে যৌন সম্পর্কে আপত্তি জানালে ব্যক্তি পরিসরের অধিকারকে লঙ্ঘন করা হয়।
এই রায়ের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতে যান একাধিক ব্যক্তি ও সংগঠন। ২০১৩ সালে দিল্লি হাইকোর্টের রায় খারিজ করে সুপ্রিম কোর্ট জানায়, ৩৭৭ ধারার সাংবিধানিক বৈধতা আছে। সমকামিতাকে অপরাধের তকমামুক্ত করতে গেলে সংসদে আইন পাস করতে হবে।
নতুন রিট আবেদন পেশ করে ফের আইনি লড়াই শুরু হয়। ২০১৩ সালের রায় বিবেচনা না করে ৩৭৭ ধারার সাংবিধানিক বৈধতা ফের সামগ্রিকভাবে বিচার করে দেখার সিদ্ধান্ত নেন শীর্ষ আদালত।
এর আগের শুনানিতে ৩৭৭ ধারা নিয়ে সিদ্ধান্তের ভার সুপ্রিম কোর্টের উপরেই ছেড়ে দিয়েছিল কেন্দ্র। বেঞ্চও ইঙ্গিত দেয়, কেন্দ্র বিরোধিতা না করলে সমকামিতার অধিকারের পক্ষেই রায় দিতে পারেন শীর্ষ আদালত।
আইনজীবীদের একাংশের মতে, ৩৭৭ ধারা পুরোপুরি খারিজ করে দিতে পারেন সুপ্রিম কোর্ট। অথবা কেবল দুই প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে যৌন সম্পর্ককে অপরাধ তকমামুক্ত করা হতে পারে।
আইনজীবীদের মতে, ভারতীয় দণ্ডবিধিতে এখনও ধর্ষণ হিসেবে মহিলাদের উপরে পুরুষের নির্যাতনকেই বিবেচনা করা হয়। তাই পুরুষ বা রূপান্তরকামীদের নির্যাতন রোখার হাতিয়ার হিসেবে ৩৭৭ ধারার একটি অংশকে খারিজ করা না-ও হতে পারে। পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্ট ব্যক্তিগত পরিসরের অধিকারকে স্বীকৃতি দেওয়ায় সমকামিতা অপরাধমুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
জয়নিউজ/আরসি