বৈরী আবহাওয়া ও বৃষ্টির কারণে সীতাকুণ্ড-সন্দ্বীপ রুটে নৌ-চলাচল চারদিন ধরে বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ। এতে সারাদেশ থেকে আসা সন্দ্বীপগামী শত শত মানুষ ঘাটে এসে ফিরে যাচ্ছেন। অন্যদিকে সন্দ্বীপ থেকে দেশের অন্য কোথাও যাওয়াও সম্ভব হচ্ছে না। তবে ঝুঁকি নিয়ে মালামালবাহী বোটগুলো পার করা হচ্ছে।
জানা যায়, সন্দ্বীপে আসা-যাওয়ার জন্য সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য পথ হলো সীতাকুণ্ডের কুমিরা ও সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া ঘাট। এই ঘাট হয়েই প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী সারাদেশ থেকে সন্দ্বীপে এবং সন্দ্বীপ থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আসা-যাওয়া করেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, এই রুটে দ্বীপ উপজেলাটিতে আসা-যাওয়ার জন্য কুমিরা ঘাট থেকে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ নিযুক্ত ইজারাদারের ১২টি স্পিডবোট ও বিআইডব্লিউটিসির একটি জাহাজ রয়েছে। স্পিডবোটগুলো নিয়মিত আসা-যাওয়া করলেও জাহাজটি প্রতিদিন একবার সীতাকুণ্ড থেকে সন্দ্বীপ যায়, আবার সন্দ্বীপ থেকে ফিরে আসে। এসব নৌযানে প্রতিদিন ন্যূনতম পাঁচশ থেকে সহস্রাধিক যাত্রী পর্যন্ত যাতায়াত করেন।
স্বাভাবিক সময়ে এভাবে যাত্রীরা আসা-যাওয়া করলেও গত প্রায় এক সপ্তাহ ধরে বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপ সৃষ্টিসহ বৈরী আবহাওয়ার কারণে ইজারাদারের লোকজন গত শনিবার থেকে ছোট নৌযানগুলো চলাচল বন্ধ করে দেয়।
এসময় শুধুমাত্র এমভি মতিন নামের জাহাজটিই ছিল যাত্রী পরিবহনের একমাত্র মাধ্যম। কিন্তু এই জাহাজটিও ২০০ যাত্রী নিয়ে গত শনিবার সন্দ্বীপ থেকে ফেরার পথে মাঝ সাগরে বিকল হয়ে যায়। তবে প্রায় ৫ ঘণ্টা ভাসমান থাকার পর সেটি উদ্ধার করে উপকূলে আনা সম্ভব হয়। এরপর থেকে জাহাজটি চলাচল বন্ধ রেখেছে বিআইডব্লিউটিসি। এর ফলে গত শনিবার থেকে সীতাকুণ্ড-সন্দ্বীপ রুটে আর কোন নৌযান চলাচল করছে না।
ভুক্তভোগীরা জানান, হঠাৎ করে এই রুটের একমাত্র জাহাজ এমভি মতিনও চলাচল না করায় অসংখ্য যাত্রী সীতাকুণ্ডের কুমিরা ও সন্দ্বীপ গুপ্তছড়া ঘাটে এসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে ফিরে যান।
মঙ্গলবার (৯ জুলাই) চট্টগ্রাম থেকে সন্দ্বীপ যাবার উদ্দেশে কুমিরা ঘাটে আসা সন্দ্বীপ উপজেলার মগধারা এলাকার বাসিন্দা রুবি আক্তার জয়নিউজকে বলেন, আমার ধারণা ছিল বৈরী আবহাওয়ার কারণে স্পিডবোট না চললেও জাহাজটি চলবে। তাই চট্টগ্রাম থেকে এসেছি। কিন্তু এখানে এসে শুনছি কাল জাহাজটি খারাপ হয়ে যাওয়ায় এটির চলাচলও বন্ধ।
এদিকে যাত্রীদের অসুবিধা ও নৌ-চলাচল বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা পরিষদের ইজারাদার এম এম আনোয়ার হোসেন জয়নিউজকে বলেন, ৩নং সতর্ক সংকেত চলছে, সাগর এখন উত্তাল। তাই আমরা সব ধরনের স্পিডবোট চলাচল বন্ধ রেখেছি। আর এমভি আবদুল মতিন জাহাজটির ইঞ্জিনেও ত্রুটি ধরা পড়েছে। তাই এটিও বন্ধ রাখতে হয়েছে।
জানতে চাইলে সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিল্টন রায় জয়নিউজকে বলেন, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় সাগরে ৩নং সতর্কসংকেত থাকায় নৌ-চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। আবহাওয়ার উন্নতি হলে আবার নৌযান চলবে। আর যে জাহাজটি সেটিও এখানে স্থায়ী না। ঈদের সময় অতিরিক্ত যাত্রী সামাল দিতে আনা হয়েছে। এখনো চলছে। তবে আজ সেটিও বন্ধ থাকায় সীতাকুণ্ড থেকে সন্দ্বীপ নৌ চলাচল বন্ধ রয়েছে।