ভারতের কলকাতা থেকে এক সপ্তাহ আগে মাছ ধরার জন্য সাগরে নামেন ২৪ পরগণার বাসিন্দা রবীন্দ্রনাথ দাস প্রকাশ কানু দাস। সঙ্গে ছিলেন আরো ১০ জেলে। কিন্তু সাগরে পড়েন বৈরী আবহাওয়ার কবলে। উত্তাল সাগরের ঢেউয়ের তোড়ে ডুবে যায় রবীন্দ্রনাথের মাছ ধরার ট্রলার।
নিরুপায় ১০ জেলে ভাসতে থাকেন সাগরের অথৈ জলে। কে কোনদিকে ভেসে গেছে কেউ জানেন না। অবিশ্বাস্য ঠেকলেও সত্য, গত এক সপ্তাহ ধরে সাগরে ভেসে ছিলেন রবীন্দ্র! আর এক সপ্তাহ পরে তাঁকে উদ্ধারে দেবদূতের মতো হাজির হয় বাংলাদেশের প্রখ্যাত ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান কেএসআরএম গ্রুপের মালিকানাধীন বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি জাওয়াদ। প্রায় দুই ঘণ্টার রূদ্ধশ্বাস অভিযানের পর এমভি জাওয়াদের নাবিকরা উদ্ধার করেন রবীন্দ্রকে।
জানা যায়, বুধবার (১০ জুলাই) বাংলাদেশ সময় সকাল ১১টার দিকে সাগরে ভাসমান রবীন্দ্রকে দেখতে পান এমভি জাওয়াদের নাবিকরা। তাঁর প্রাণ রক্ষার্থে তৎক্ষণাৎ তাঁর দিকে বয়া ও লাইফ জ্যাকেট ছুঁড়ে দেন জাওয়াদের নাবিকরা। তবে রবীন্দ্র শুধু লাইফ জ্যাকেটটি ধরতে পারেন।
লাইফ জ্যাকেট পেয়ে যেন প্রাণ ফিরে পান রবীন্দ্র। এর মাধ্যমে তিনি আরেকটু ভালোভাবে সাগরে ভাসতে থাকেন। এরপর এমভি জাওয়াদ থেকে পার্শ্ববর্তী জাহাজ, বাংলাদেশ নেভি ও কোস্টগার্ডকে বার্তা পাঠানো হয়। তবে খারাপ আবহাওয়ার কারণে নেভি ও কোস্টগার্ড সদস্যরা দ্রুত আসতে পারবে না বলে জানায়।
এ অবস্থায় এমভি জাওয়াদের নাবিকরাই রবীন্দ্রকে বাঁচানোর সিদ্ধান্ত নেন। প্রায় দুই ঘণ্টা চেষ্টার পর দুপুর পৌনে ১টার দিকে দিকে রবীন্দ্রকে জাহাজে তুলতে সক্ষম হন এমভি জাওয়াদের নাবিকরা। মুমূর্ষ অবস্থা থাকায় তাঁকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হয়। এরপর রবীন্দ্রকে পুষ্টিকর খাবার ও প্রয়োজনীয় পোশাক দেন জাওয়াদের নাবিকরা।
রবীন্দ্রনাথ ২৪ পরগনা জেলার কাকদ্বীপ থানার নারায়ণপুর গ্রামের মধুমঙ্গল দাসের ছেলে।