বরগুনার আলোচিত রিফাত হত্যাকাণ্ডে একের পর এক অভিযোগের তীর ছুটে আসছে নিহতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির দিকে। ভিডিও ফুটেজে মিন্নির ‘বডি ল্যাঙ্গুয়েজ’ দেখে হত্যাকাণ্ডে মিন্নির সম্পৃক্ততার অভিযোগ তুলেছেন অনেকে।
এবার জলন্ত আগুনে ঘি ঢেলেছেন নিহত রিফাত শরীফের বাবা আবদুল হালিম। শনিবার (১৩ জুলাই) বরগুনা প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে আবদুল হালিম অভিযোগ করেন, এ হত্যাকাণ্ডে রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি জড়িত। তিনি মিন্নির গ্রেপ্তার দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে আবদুল হালিম বলেন, প্রতিদিন মিন্নি একাই কলেজে যেতেন। তিনি ঘটনার দিনও একাই কলেজে গিয়েছিলেন। এরপর ফোন করে রিফাতকে কলেজে ডেকে নেন।
তিনি বলেন, ঘটনার পর নতুন করে প্রকাশ পাওয়া ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, কলেজ গেট থেকে রিফাত শরীফকে ধরে নেওয়ার সময় মিন্নি নির্লিপ্ত ছিলেন। এরপর কুপিয়ে জখম করার পর মিন্নি রিফাতকে হাসপাতালে নেওয়ার বদলে নিজের জুতা খুঁজছিলেন এবং আক্রমণকারীদের একজন তাঁর (মিন্নি) হাতব্যাগ তুলে দিচ্ছিল। এতগুলো তরুণ রিফাতের ওপর হামলা চালাল অথচ একটি আঘাতও মিন্নির শরীরে লাগল না, এটা রহস্যজনক।
নিহত নয়ন বন্ডের মা সাহিদা বেগমের বক্তব্যের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে সাহিদা বলেছেন, মিন্নি ঘটনার আগের দিনও তাঁর বাসায় গেছেন এবং নয়নের সঙ্গে দেখা করেছেন। এ ছাড়া নয়ন বন্ডের সঙ্গে হওয়া বিয়ের কথা গোপন করেছিলেন মিন্নি ও তাঁর পরিবার। নয়নকে তালাক না দিয়েই তিনি (মিন্নি) রিফাতকে বিয়ে করেন। তাঁর ভাষ্য, বিয়ের পরেও মিন্নি নয়নের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখেন।
রিফাত রক্তাক্ত অবস্থায় একাই রিকশায় করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে যান উল্লেখ করে আবদুল হালিম বলেন, এরপর যখন গুরুতর অবস্থায় রিফাতকে অ্যাম্বুলেন্সে বরিশাল নেওয়া হয়, তখন মিন্নি তাঁর সঙ্গে যাননি।
মিন্নিকে রিমান্ডে নেওয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, আমার প্রশ্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ সব ক্ষেত্রে মিন্নির ভূমিকা নিয়ে ব্যাপক আলোচনার ঝড় বইলেও কেন তাঁকে (মিন্নি) আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে না। এ অবস্থায় আমি প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশের আইজিপির কাছে দাবি জানাই, অবিলম্বে মিন্নিকে আটক করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক। আর সেটা করা হলেই রিফাত শরীফ হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন হবে।
প্রসঙ্গত, গত ২৬ জুন সকালে বরগুনা সরকারি কলেজের মূল ফটকের সামনের রাস্তায় স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির সামনে কুপিয়ে জখম করা হয় রিফাত শরীফকে। বেলা তিনটার দিকে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিফাতের মৃত্যু হয়।