ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ডের ফাইনালের মধ্যদিয়ে শেষ হচ্ছে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের লড়াই। এবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন কে হচ্ছেন- এই আলোচনার পাশাপাশি কৌতুহলের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে আরেকটি বিষয়। দ্বাদশ বিশ্বকাপ ক্রিকেটে কে হচ্ছেন টুর্নামেন্টসেরা- আলোচনার টেবিলে ঝড় তুলেছে এ বিষয়টিও।
সেরা হওয়ার লড়াইয়ে আছেন টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ভারতের ওপেনার রোহিত শর্মা, অস্ট্রেলিয়ার ওপেনার ওয়ার্নার ও পেসার স্টার্ক, নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন এবং ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যান জো রুট।
তবে এদের ছাড়িয়ে নিশ্চিতভাবেই আলোচনায় এগিয়ে আছেন বাংলাদেশের অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। দল সেমিফাইনালে না উঠলে পুরো টুর্নামেন্টে ব্যাটে-বলে দারুণ করেছেন তিনি। অনেক ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের মতে, সাকিবই এবারের বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়।
দল সেমিফাইনাল-ফাইনালে না উঠলে ব্যক্তিগত অর্জনকে কিভাবে দেখা হবে? এ বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনো নিয়ম নেই। তাই সেরা হওয়ার দৌড়ে সমান সুযোগ রয়েছে রোহিত, ওয়ার্নার, স্টার্ক ও সাকিবের।
গ্রুপ পর্বে দলের জয়ে সবচেয়ে বেশি অবদান ছিল রোহিত, ওয়ার্নার আর সাকিবের। বিশ্বকাপের এক আসরে পাঁচ সেঞ্চুরি করে ইতিহাস গড়েছেন রোহিত। ৬৪৮ রান নিয়ে এখনো তিনি সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক।
অস্ট্রেলিয়ার ওপেনার ওয়ার্নার তিন সেঞ্চুরির সঙ্গে করেছেন তিন অর্ধশতক। ৬৪৭ রান নিয়ে তিনি আছেন সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকার দুই নম্বরে (ফাইনালের আগ পর্যন্ত)।
ইংল্যান্ডের জো রুটও দলকে টেনে তুলেছেন ফাইনালে। ১০ ম্যাচে ৫৪৯ রান নিয়ে তালিকার চার নম্বরে আছেন রুট। দুই সেঞ্চুরির সঙ্গে আছে তিন অর্ধশতক।
৯ ম্যাচে দুই সেঞ্চুরিতে ৫৪৮ রান নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন আছেন তালিকার পাঁচ নম্বরে।
আর বাংলাদেশের অলরাউন্ডার সাকিব দলকে সেমিফাইনালে তুলতে না পারলেও মন জয় করেছেন ক্রিকেট বিশ্বের। ধারাভাষ্য দিতে যাওয়া বিশ্বের সেরা সাবেক ক্রিকেটারা মেতেছেন সাকিববন্দনায়। ব্যাটিং-বোলিংয়ে যিনি মাতিয়ে রেখেছিলেন ইংল্যান্ডের স্টেডিয়ামগুলো।
সাকিবই বিশ্বকাপ ক্রিকেট ইতিহাসের একমাত্র খেলোয়াড় যার ঝুলিতে ছয় শতাধিক রানের সঙ্গে রয়েছে ১০টির বেশি উইকেট। তাঁর আট ইনিংসের সাতটিই পঞ্চাশোর্ধ্ব! দুই সেঞ্চুরিসহ মোট রান ৬০৬, সঙ্গে উইকেট ১১টি।
এদিকে বোলিংয়ে স্টার্ক দু’বার ৪টি করে আর দুই ম্যাচে ৫ উইকেট শিকার করছেন। এরপরও ম্যান অফ দ্য ম্যাচ হননি একবারও! অস্ট্রেলিয়ার বিদায়ে ২৭ উইকেট নিয়েও টানা দ্বিতীয়বার টুর্নামেন্ট সেরার পুরষ্কারটা তাই একপ্রকার কঠিন হয়ে গেছে স্টার্কের জন্য।
ইংল্যান্ড ফাইনাল খেলছে বলে টুর্নামেন্ট সেরার বাতাসটা রুটের সঙ্গে একটু হলেও লাগছে জোফরা আর্চারের গায়ে। ১৯ উইকেট নিয়ে সেরা বোলারের তালিকার তিনে আছেন এ পেসার।
তবে বড় মঞ্চে টুর্নামেন্ট সেরার হিসাবটা হয়ে যায় সেমিফাইনাল পর্যায়েই। সেক্ষেত্রে ভাগ্য হাসতে পারে সাকিব, রোহিত, ওয়ার্নার কিংবা স্টার্কের দিকে।
১৯৯২-এর বিশ্বকাপ থেকে মূলত ম্যান অফ দ্য টুর্নামেন্ট চালু হয়। ওই আসরে মার্টিন ক্রো আর ১৯৯৯ বিশ্বকাপে লান্স ক্লুসনারের কথা বাদ দিলে চ্যাম্পিয়ন-রানার্সআপ দলের খেলোয়াড়ের বাইরে আর কারো কপালে জুটেনি টুর্নামেন্ট সেরার স্বীকৃতি। এবারও কি এই ধারাবাহিকতা, নাকি নতুন কিছু, জানতে অপেক্ষায় থাকবে হতে আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা।
জয়নিউজ