পুলিশ জনগণের বন্ধু। তবে এ ধারণা পোষণ করেন এমন মানুষ খুঁজতে আতশকাচ লাগতে পারে! ঘটনা নিজ চোখে দেখেও বাদী কিংবা মামলার সাক্ষী হতে ভয়, পুলিশকে সত্য ঘটনা জানাতে ভয়, পাছে নিজে না আবার কোন হয়রানিতে পড়েন! এই যখন পরিস্থিতি তখন এগিয়ে এলেন কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন।
জনতার সঙ্গে পুলিশের দূরত্ব কমাতে তিনি বের করলেন নতুন এক উপায়। পুরো ব্যাপারটার নাম রাখলেন ‘হ্যালো ওসি’।
কেমন সে উদ্যোগ? জানতে চাইলে ওসি মহসীন জয়নিউজকে বলেন, মানুষ নাকি থানায় আসতে লজ্জা পায়, আবার ওসির কাছে যেতেও ভয় পায়! মানুষের সেই লাজ ভাঙাতে আর ভয় কাটাতে এবার গতানুগতিক সেবার বাইরে গিয়ে ওসি নিজেই যাবেন জনগণের দোরগোড়ায়। পুরো ব্যাপারটির নাম দিয়েছি ‘হ্যালো ওসি’।
বুধবার (১০ জুলাই) নগরের কোতোয়ালি থানার অন্যতম অপরাধপ্রবণ এলাকা হিসেবে পরিচিত বিআরটিসির জামলতা বস্তিতে প্রথমবার হ্যালো ওসি’র বুথ নিয়ে হাজির হয়েছিলেন ওসি মহসীন। পুলিশের এমন উদ্যোগে সেখানে ছিল মানুষের ভিড়।
আর ভয় ভেঙে সেখানে উপস্থিত হয়েছিলেন মাদক ব্যবসায়ী শাকিল। তিনি বের হতে চান এ পেশা থেকে। তার মা-বাবা ও এলাকার গণ্যমান্যদের উপস্থিতিতে স্বীকার করলেন নিজের দোষ। কথা দিলেন, আর পা বাড়াবেন না ভুল পথে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মহসীন জয়নিউজকে বলেন, হ্যালো ওসি শুরু করেছিলাম জামতলা এলাকায়। ব্যাপারটা জানতে পেরে সুপথে ফিরতে চেয়ে যোগাযোগ করেছিলেন পাথরঘাটার আশরাফ আলী রোডের চার মামলার আসামি সাগর প্রকাশ হাসান। সাক্ষী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তার মা। আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে থেকে আমরাও তাকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছি। একই প্রক্রিয়ায় সুপথে ফিরতে ঢাকা থেকে আজ রোববার (১৪ জুলাই) ছুটে এসেছেন মামলার আসামি জাহেদুল ইসলাম জনি। সাক্ষী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তারই বাবা-মা। তাকেও আশ্বস্ত করেছি আমরা।
ওসি বলেন, প্রতিটি এলাকাতেই এখন হ্যালো ওসি বুথ খোলা হবে। সেখানে সবাই নির্ভয়ে সমস্যার কথা আমাদের বলতে পারবে। সঙ্গে সুযোগ থাকছে ওসিকে জবাবদিহি করার।
সিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) আমেনা বেগম জয়নিউজকে বলেন, এ উদ্যোগ অবশ্যই প্রশংসনীয়। আমরা মানুষের দোরগোড়ায় যেতে চাই। এরকম ছোট ছোট বুথ হলে মানুষের আর থানায় যেতে হবে না। এর মধ্যেদিয়ে সমাজে অপরাধ কমে আসবে। আরো বড় পরিসরে এ আয়োজন করা যায় কি-না এটা নিয়ে কথা বলছি আমরা।