বান্দরবানে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তবে প্রধান সড়ক বন্যার পানিতে প্লাবিত থাকায় সাতদিনেও চালু হয়নি বান্দরবানের সঙ্গে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ। বৃষ্টি বন্ধ হলেও সাঙ্গু নদীর পানি এখনো বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সোমবার (১৫ জুলাই) প্লাবিত এলাকাগুলো থেকে বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় আশ্রয়কেন্দ্রগুলো ছেড়ে ঘরে ফিরছে দুর্গতরা। বন্যার পানি নেমে গেলেও দুর্গতাঞ্চলের মানুষের এখানো দুর্ভোগ কমেনি।
বন্যায় ঘরবাড়ি এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে রেখে যাওয়া কাদা-মাটি, ময়লা-আবর্জনা পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ করতে গিয়ে নতুন ভোগান্তিতে পড়েছে বন্যার্তরা। ইতোমধ্যে পরিস্কার এবং বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট তৈরি হয়েছে বন্যা কবলিত এলাকাগুলোতে।
ডায়রিয়া, সর্দি-কাশিসহ পানিবাহিত নানা ধরণের রোগ ছড়ানোর শঙ্কা দেখা দিয়েছে বন্যা কবলিত এলাকাগুলোতে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় স্বাস্থ্য বিভাগের ৪১টি মেডিকেল টিম কাজ শুরু করেছে বলে জানা যায়।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, বন্যায় প্লাবিত বান্দরবান সদরের আর্মীপাড়া, মেম্বারপাড়া, শেরেবাংলা নগর, ইসলামপুর, হাফেজঘোনা, বনানী সমিল, ফায়ার সার্ভিস এলাকা, বালাঘাটাসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে বন্যার্তরা আশ্রয়কেন্দ্রগুলো থেকে ঘরবাড়ি-ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর ময়লা-আবর্জনা এবং কাদা-মাটি পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ করছে। অনেকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ইলেকট্রিক সামগ্রি এবং আসবাবপত্র সরাচ্ছে। আবার অনেকেই বন্যার পানির স্রোতে ভেঙে যাওয়া ঘরবাড়ির জিনিসপত্র মেরামতের কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।
বন্যায় ভুক্তভোগী আব্দুল মান্নান, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, ইসমত আরা জয়নিউজকে বলেন, বন্যায় ঘরবাড়ি সব ডুবে গিয়েছিল। পানি নেমে যাওয়ায় আশ্রয়কেন্দ্র থেকে ঘরে ফিরেছি। কিন্তু ময়লা-আবর্জনা এবং কাদা-মাটির দুর্গন্ধে ঘরে ঢোকা যাচ্ছেনা। পানির অভাবে পরিস্কার পরিচ্ছন্নের কাজও করতে পারছিনা।
তারা বলেন, বন্যায় আশপাশের এলাকাগুলোতে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট তৈরি হয়েছে। টিউবওয়েলগুলো বন্যায় ডুবে যাওয়া খাবার পানির সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। কিন্তু প্রশাসন, পৌরসভা এবং স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে কেউই আসেনি। ঘরবাড়ি পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কাজে দুষিত পানি ব্যবহার করা হচ্ছে। এগুলোতে রোগব্যাধি ছড়াচ্ছে। পানিবাহিত রোগ দেখা দিয়েছে মানুষজনের মধ্যে।
জেলা সিভিল সার্জেন্ট ডা. অংসুই প্রু মারমা জয়নিউজকে বলেন, বন্যায় কবলিত এলাকাগুলোতে বিশুদ্ধ পানির সংকটে নানা ধরণের রোগব্যাধি দেখা দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তারমধ্যে ডায়রিয়া, সর্দি-কাশি, পেটব্যথাসহ পানিবাহিত নানা ধরণের রোগ হতে পারে। তবে দুর্যোগ মোকাবেলায় স্বাস্থ্য বিভাগের ৪১টি টিম কাজ করছে। প্লাবিত এলাকাগুলোতে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটসহ প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র সরবরাহ করা হচ্ছে।