সন্ধ্যায় ঠাকুর বাতি দিয়ে ভাত রাঁধতে উনুনে আগুন দিয়েছিলেন চন্দনা। হাঁড়িতে ভাত হয়েও এসেছিল। টেবিল থেকে আসছিল তখন তার সন্তানের গুনগুন পড়ার শব্দ। হঠাৎ আগুন লাগা দেখে প্রাণ হাতে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে এলেন তিনি। সঙ্গে তার সন্তান। রাস্তায় এসে দাঁড়াতেই আগুন ছড়িয়ে পড়ল তার ঘরেও।
পাশের ঘর থেকে ধেয়ে আসা এ আগুন নিমিষেই পুড়ে অঙ্গার করে দিল চন্দনার সোনার সংসার। শুধু চন্দনাই নয়, আসকার দিঘীর পশ্চিম পাড়ের লোকনাথ মন্দিরের আশপাশ ঘিরে গড়ে ওঠা ১২টি এমন সংসার এখন ছাই!
নিঃস্ব হয়ে যাওয়া এই পরিবারগুলোতে চলছে শোকের মাতম।
চন্দনা দে জয়নিউজকে বলেন, ঘরে ছিল নানান গুরুত্বপূর্ণ নথি। জমির দলিল, স্বর্ণালংকার, চেক বই, নগদ অর্থসহ অনেক কিছুই। সাথে ছিল সংসারের জন্য তিলে তিলে জোগাড় করা আসবাবপত্র। সন্তানদের বইগুলো ছিল তাদের সবচেয়ে প্রিয় বস্তু। কিছুই রক্ষা হয়নি। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখলাম এসবের পুড়ে যাওয়া। সোনার সংসার শূন্য হয়ে গেল।
ঘর পুড়ে নিঃস্ব হওয়া বাপ্পী দে বলেন, আগুন লাগার খবর পেয়ে দৌঁড়ে আসলাম। ততক্ষণে দেরি হয়ে গেছে। সব পুড়ে শেষ। জীবনের সব সম্বলের ছাই হওয়া এভাবে দেখতে হবে কখনো ভাবিনি। একসাথে ১২ পরিবার পথে বসলাম।
এদিকে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বৃহস্পতিবার রাতেই খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে জামালখান ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয় থেকে।
ক্ষতিগ্রস্তরা প্রাথমিকভাবে আশ্রয় নিয়েছেন পাশ্বর্বর্তী রামকৃষ্ণ মিশনের মন্দিরে।
এ বিষয়ে জামাল খান ওয়ার্ড কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন জয়নিউজকে বলেন, এ ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে ওঠা কঠিন। তবে আমাদের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে। প্রাথমিকভাবে আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের খাবারের ব্যবস্থা করেছি। তারা বর্তমানে রামকৃষ্ণ মিশনের মন্দিরে আশ্রয় নিয়েছে।
জয়নিউজ/এফও/জেডএইচ-