যানজট ও জলজট থেকে এলাকাবাসীকে মুক্তি দিতে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (চবক) চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল জুলফিকার আজিজের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি খোরশেদ আলম সুজন।
বুধবার (১৭ জুলাই) সকাল ১১টায় বন্দর-পতেঙ্গার ৬ ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে চবক চেয়ারম্যানের এক মতবিনিময় সভায় এ আহ্বান জানান তিনি।
এ সময় সুজন বলেন, আমাদের বাপ দাদার ভিটে মাটির উপর চট্টগ্রাম বন্দর প্রতিষ্ঠিত। ভৌগলিক কারণে এখানে চট্টগ্রাম বন্দর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বন্দর প্রতিষ্ঠা হওয়ার কারণে দেশের অর্থনীতিতে এক যুগান্তকারী সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে।
ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম বন্দর তাঁর দক্ষতায় পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ট বন্দরের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। আগামীতে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ স্থান করে নিবে চট্টগ্রাম বন্দর।
বন্দর কেন্দ্রিক যানজটের কারণে এএলাকার মানুষের জীবনযাত্রা স্থবির হয়ে পড়েছে। বন্দরের বিভিন্ন স্থাপনা এবং অবকাঠামো নির্মাণের কারণে আমরা এখন জলাবদ্ধতার শিকার। বিভিন্ন এলাকায় পানি নিস্কাশনের যে খালগুলো পূর্বে ছিল বন্দরের স্থাপনার কারণে সেগুলো ভরাট হয়ে ক্রমান্বয়ে নালায় পরিণত হয়েছে।
অফডক ইয়ার্ড কেন্দ্রিক যানজটের কারণে বিদেশি নাগরিকরা চট্টগ্রামে আসতে অনীহা প্রকাশ করছে। এতে করে ব্যবসা বাণিজ্যের উপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে চট্টগ্রাম ব্যবসাশুন্য নগরীতে পরিণত হবে। যার প্রভাব পড়বে জাতীয় অর্থনীতিতে।
তিনি চট্টগ্রামের মেয়র এবং মন্ত্রীদের সহযোগিতা নিয়ে বিষয়গুলোর সমাধানে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
এসময় চবক চেয়ারম্যান জুলফিকার আজিজ নেতাদের বক্তব্য শুনে মতবিনিময় করতে আসায় সকলকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, প্রতিটি দাবি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হবে। তবে গত কয়েকদিনের ভয়াবহ যানজটের সঙ্গে বন্দর কর্তৃপক্ষ কোনোভাবেই দায়ী নয়।
নগরের বিভিন্নভাবে সেবা সংস্থাসমূহ উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে। তাছাড়া বৃষ্টিতে রাস্তাঘাটে খানা খন্দের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে স্বাভাবিক নিয়মে গাড়ি চলাচল করতে পারছে না। এটাও যানজটের অন্যতম কারণ বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, বে-টার্মিনালের নির্মাণ কাজ চলছে। বে- টার্মিনাল প্রস্তুত হলে ইয়ার্ডগুলো সেখানে স্থানান্তর হবে। সেখানে অত্যাধুনিক ট্রাক টার্মিনাল নির্মিত হবে। ফলে চট্টগ্রাম শহরে ট্রাকের যে যানজট সেটা আর হবে না। এছাড়া বন্দরের অর্থায়নে আগামী দুই বছরের মধ্যে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা হবে। এর ফলে সরাসরি মূল সড়ক বাদ দিয়ে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মাধ্যমে বন্দরগামী গাড়িগুলো বন্দরে প্রবেশ এবং বাহির হয়ে যাবে। ফলে জনদুর্ভোগ লাঘব হবে। তাছাড়া ভ্রমণ পিপাসুদের সুবিধার্থে প্যাসেঞ্জার জাহাজও চালু করা হবে বলে জানান তিনি।
সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চবক সচিব মো. ওমর ফারুক, মহানগর আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক হাজী জহুর আহমদ কোম্পানী, নূরুল আলম, কামরুল হাসান ভুলু, রোটারিয়ান মো. ইলিয়াছ, ইপিজেড থানা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক হাজী হারুনুর রশীদ, যুগ্ম-আহ্বায়ক মো. আবু তাহের, বন্দর থানা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হাজী মো. ইলিয়াছ, চট্টগ্রাম বন্দর কর্মচারী পরিষদের (সিবিএ) সভাপতি আবুল মনছুর, কার্যকরী সভাপতি মো. আজিম, সহসভাপতি মোকারম হোসাইন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আব্দুস ছাদেক নান্না, সহসাধারণ সম্পাদক নাছির চৌধুরী, আশীষ কান্তি মুহুরী, ৪১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলম, ৩৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. সুলতান নাছির উদ্দিন, ৩৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নান, ৩৬নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক মো. ইসকান্দর মিয়া, ৪১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. সেলিম, ৩৬নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক মোর্শেদ আলী।