প্রায় ২০০ বছর ধরে মধ্যযুগের বিখ্যাত এক দাবা সেটের কয়েকটি ঘুঁটি পাওয়া যাচ্ছিল না। সম্প্রতি ওই দাবা সেটের একটি ঘুঁটির সন্ধান মিলেছে। নিলামে এর দাম উঠেছে প্রায় ৭৩৫,০০০ পাউন্ড। এই ঘুঁটিটির নাম ‘দ্য ওয়ার্ডার’। অর্থাৎ আধুনিক দাবার বোর্ডে যা ‘রুক’ বা বাংলায় যাকে আমরা নৌকা বলি সেরকম।
লিউইস চেসম্যান-এর বহুলচর্চিত দাবার ঘুঁটি এটি। দ্বাদশ শতকের শেষে অথবা ত্রয়োদশ শতকের গোড়ার দিকে ওয়ালরাস আইভরি (সিন্ধুঘোটকের দাঁত) থেকে বানানো হয়েছিল এই ঘুঁটি ।
জানা গেছে, এক অ্যান্টিক ডিলার ১৯৬৪ সালে মাত্র পাঁচ পাউন্ডে কিনে নিয়েছিলেন এই ঘুঁটিটি । পারিবারিকভাবে হাত বদল হয়ে যার হাতে শেষপর্যন্ত এসেছে তিনি জানতেনই না যে সামান্য এই দাবার ঘুঁটি এতটা মূল্যবান। তিনি সদবি’র অকশন হাউসে এই ঘুঁটিটিকে নিয়ে আসার পর বুঝতে পারেন এই সামান্য ঘুঁটির মাহাত্ম্য।
এটি মধ্যযুগের সবচেয়ে বিখ্যাত দাবার সেট ‘লিউইস চেসমেন’, যা সম্ভবত ৫০০ বছর ধরে মাটির তলায় ছিল। জাহাজডুবির পর কোনো ব্যবসায়ী হয়তো কর ফাঁকি দেওয়ার জন্য মাটির তলায় পুঁতে রেখেছিল এগুলোকে। এই দাবার ৯৩টি অংশ ১৮৩১ সালে হেব্রাইডের নিকটবর্তী আইল অব লিউইস থেকে উদ্ধার করা হয়। কিন্তু সে সময় বাকি পাঁচটি ঘুঁটি পাওয়া যায়নি। সেগুলোর কী হয়েছিল তা রহস্য হয়েই ছিল এতদিন।
সদবি-এর আলেকজান্ডার কেডার এতদিন পর খুঁজে পাওয়া ‘ওয়ার্ডার’ ঘুঁটিটির বিবরণ দিয়েছেন। এই ‘ওয়ার্ডার’ ঘুঁটির আকৃতি মানুষের মতোই, যার শিরস্ত্রাণ, ঢাল, তলোয়ার রয়েছে। একটু যেন আহত, আর এক চোখ অন্ধ।
প্রাচীন এই ঘুঁটিটি ইতিহাসবিদ ও প্রত্নতাত্ত্বিকদের মধ্যে ব্যাপক আলোড়ন তৈরি করেছে। এই ঘুঁটির পুনরুদ্ধারে বেশ রোমাঞ্চিত সকলেই। ইতিহাস গবেষণার বহু দিক খুলে দিতে পারে মধ্যযুগের হঠাৎ খুঁজে পাওয়া এই দাবার ঘুঁটি। বর্তমানে লিউইস চেসমেন-এর ৮২টি অংশ রাখা আছে ব্রিটিশ মিউজিয়ামে এবং বাকি ১১টি রয়েছে স্কট্ল্যান্ডের ন্যাশনাল মিউজিয়ামে |
জয়নিউজ/আরসি