বান্দরবানে মসলা চাষিদের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক ম্যানেজারসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে দুদকে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এদিকে মামলা দায়েরের পর প্রধান আসামি অগ্রণী ব্যাংক বান্দরবান শাখার সাবেক ম্যানেজার নিবারন চন্দ্র তঞ্চঙ্গ্যাকে (৫৯) নগরের জিইসি মোড়ের বাসা থেকে আটক করেছে দুদকের সদস্যরা।
এ মামলার বাকি আসামিরা হলেন- দালাল ক্যচিঅং মারমা (৪৫), অগ্রণী ব্যাংকের মাঠকর্মী জ্ঞান চাকমা (৫০), জ্যোতিষ কুমার খীসা (৪৯) ও হীরেন্দ্র লাল চাকমা (৪৭)।
রোববার (২১ জুলাই) চট্টগ্রাম-২ দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ-পরিচালক মাহবুবুল আলমের কাছে অর্থ আত্মসাতের মামলাটি করেন চট্টগ্রাম দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক ও অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা মুহাম্মদ জাফর সাদেক শিবলী।
মামলার বাদী দুদকের চট্টগ্রাম-২ উপ-সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ জাফর সাদেক শিবলী বলেন, আদা-হলুদ চাষের জন্য ২০১১-১২ এবং ২০১২-১৩ অর্থবছরে বান্দরবান জেলায় ৩০টি ঋণের মধ্যে অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক মাঠকর্মী জ্যোতিষ কুমার খীসা ও জ্ঞান চাকমা ১১টি করে ২২টি ঋণের অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করেন। আর মাঠকর্মী হীরেন্দ্র লাল চাকমা ৮টি ঋণের অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করেন। কিন্তু তিনজন মাঠকর্মীর সুপারিশের ৩০টি ঋণের অনুমোদনকারী কর্মকর্তা ছিলেন বান্দরবান অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক শাখা ব্যবস্থাপক নিবারন চন্দ্র তনচংগ্যা।
স্থানীয় দালাল ক্যচিঅং মারমা প্রায় সবকটি ঋণের বিপরীতে গ্রাহকদের ছবি এবং জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করে নিজেই আবেদন ফরম পূরণ, স্বাক্ষর প্রদানসহ যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে জমা দেন। ৩০টি ঋণের বিপরীতে অগ্রণী ব্যাংক বান্দরবান শাখা হতে ২৮ লাখ ৯০ হাজার টাকা পাহাড়ীদের আদা ও হলুদ চাষিদের মাঝে বিতরণ করা হবে দেখিয়ে উত্তোলন করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে কয়েকজন চাষিকে এক লাখ ২০ হাজার টাকা প্রদান করে বাকি ২৭ লাখ ৭০ হাজার টাকা আত্মসাত করেন। যা সুদাসলে মোট ৫০ লাখ ২২ হাজার ৫০৫ টাকা হয়েছে। তদন্তে আত্মসাতের বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় অভিযুক্ত ৫ জনের বিরুদ্ধে দুদকে মামলা করা হয়েছে, বলেন তিনি।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম-২ দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ-পরিচালক মাহবুবুল আলম বলেন, মসলা চাষিদের মাঝে বিতরণের নামে ব্যাংকের অর্থ আত্মসাতের মামলায় প্রধান আসামী অগ্রণী ব্যাংক বান্দরবান শাখার সাবেক ম্যানেজার নিবারন চন্দ্র তঞ্চঙ্গ্যাকে বাসা থেকে আটক করা হয়েছে। অন্য আসামীদেরও আটকের চেষ্টা চলছে। মামলার তদন্তকালে আত্মসাতের ঘটনায় অন্যকারো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।