চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের প্রধান বাহন শাটল ট্রেন। প্রয়োজনের চেয়ে অপ্রতুল এর বগি ও আসন। প্রতিদিন প্রায় ১৫ হাজার শিক্ষার্থী যাতায়াত করেন এতে।
নগরের বটতলী স্টেশন থেকে ক্যাম্পাসগামী কিংবা ক্যাম্পাস থেকে নগরগামী প্রতিটি যাত্রায় থাকে উপচেপড়া ভিড়।কিন্তু বহিরাগতদের উৎপাতে বোঝার উপায় থাকে না এটি চবির শাটল নাকি রুটের কোনো লোকাল ট্রেন।
নগরের বটতলী স্টেশন থেকে শুরু করে দেওয়ানহাট, ঝাউতলা, ষোলশহর, ক্যান্টনমেন্ট, চৌধুরীহাট ও ফতেয়াবাদসহ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বিনা পয়সায় যাতায়াতের সুবিধা নিচ্ছে এ বহিরাগত যাত্রীরা। এতে যেমন ভোগান্তি বাড়ছে শিক্ষার্থীদের, তেমনই মোটা অংকের রাজস্ব হারাচ্ছে রেলওয়ে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ক্যাম্পাসে যাওয়া-আসার ক্ষেত্রে প্রায়ই দেখা যায় ছাত্রছাত্রীরা দাঁড়িয়ে থাকলেও বহিরাগতরা আসন দখল করে বসে আছে। এমনকি অনেক সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাজে আচরণ করে তারা। অভিযোগ আছে, রাতে বটতলী স্টেশনে অবস্থানকালে চবির শাটলে নানা অসামাজিক কার্যকলাপ ও গাঁজার আসর বসে। এমনকি প্রায়ই বিভিন্ন বগিতে মলমূত্র ত্যাগ করে থাকে তারা। অনেক সময় তা পরিষ্কার করা হয় না। এতে বিপাকে পড়তে হয় শিক্ষার্থীদের।
সরেজমিনে দেখা যায়, বটতলী থেকে ষোলশহর স্টেশনে ট্রেন পৌঁছানোর সময় দরজায় বহিরাগত যাত্রীরা দাঁড়িয়ে থাকে। আর ষোলশহরে শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বেশি ভিড় থাকে। এতে শিক্ষার্থীদের উঠতে অসুবিধা হয়। বহিরাগতদের নামার তোড়জোড়ে ভিড় জমে যায় দরজায়। ফলে যে কোনো সময়ই দুর্ঘটনার শিকার হতে পারেন শিক্ষার্থীরা।
নিয়মিত শাটল ব্যবহার করেন এমন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিদিনই নিজেদের মালামাল বহনের জন্য শাটল ট্রেনকে ব্যবহার করে কিছু নিম্নবিত্ত মহিলা। আবার কিছু অসাধু চাকরিজীবীও বিনা পয়সায় যাতায়াতের সুবিধা নিতে উঠে বসে শাটলের সিটে। স্কুল- কলেজের ছাত্র, শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরাও রয়েছে এ সারিতে। নিয়মিতই উৎপাত করে ভিক্ষুক ও ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীরা। আবার ছিন্নমূল কিছু পথশিশু দৌড়ঝাঁপ করে এ বগি থেকে ও বগিতে।
বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনে কথা হয় বাংলা বিভাগের ছাত্র তামজিদুল ইসলাম অভির সঙ্গে। তিনি জয়নিউজকে জানান, ষোলশহর থেকে আমরা উঠতে গিয়ে সমস্যায় পড়ি। বহিরাগতরা দরজা দখল করে নেয়। অনেকেই শেষ মুহূর্তে উঠতে গিয়ে এদের কারণে ঝামেলায় পড়ে যায়।
একই বিভাগের আরেক ছাত্র নেয়ামত উল্লাহ বলেন, ক্যাম্পাস থেকে শহরে যাওয়ার সময় প্রচণ্ড ভিড় থাকে। পা রাখার জায়গাও পাওয়া যায় না। ট্রেন ফতেয়াবাদ, চৌধুরীহাট আর ক্যান্টনমেন্টে দাঁড়ালে বহিরাগতরা ঠেলাঠেলি করে উঠে যায়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর প্রণব মিত্র চৌধুরী জয়নিউজকে বলেন, বহিরাগতদের তো সহজে শনাক্ত করা যায় না। তবে আমরা প্রশাসনিকভাবে ব্যাপারটা দেখব। আর শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা পেলে ব্যবস্থা নিতে আমাদের সুবিধা হবে।
জয়নিউজ/পিডি/আরসি