রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় ‘ছেলেধরা’ সন্দেহে গণপিটুনিতে প্রাণ হারান তাসলিমা বেগম রেনু (৪০)। হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে শত মানুষের ভিড়ে রাজপথে নেমেছে তার চার বছরের শিশুকন্যা তাসনিম তুবাও।
মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে লক্ষ্মীপুর-রায়পুর সড়কে রেনুর হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে স্থানীয়রা।
নিহতের বোন সেলিনা আক্তার বলেন, তাসলিমা ছোটবেলা থেকেই বাবার সঙ্গে ঢাকায় বসবাস করত। সেখানেই উত্তর বাড্ডা এলাকার তসলিম উদ্দিনের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছিল। তাদের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। গত বছর পারিবারিক কলহের কারণে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়।
তিনি বলেন, শনিবার (২০ জুলাই) সকালে ঢাকার উত্তর পূর্ব বাড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে আমার বোন রেনুকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। মেয়েকে ভর্তির জন্য ওই স্কুলে খোঁজ নিতে গিয়েছিলেন তিনি। আমি এ হত্যার বিচার চাই।
মানববন্ধনে রায়পুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মারুফ বির জাকারিয়া, পৌর যুবলীগ নেতা হোসেন সরদার, তানভীর কামাল ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জাকির হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, শ্রেণি-পেশাসহ সর্বস্তরের মানুষ অংশ নেয়।
বক্তারা বলেন, ছেলেধরা গুজবেই রেনুকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এটা কোনো সভ্য সমাজে হতে পারে না। তার হত্যাকারীদের দ্রুত চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানান তারা।
এসময় রেনুর পরিবারের লোকজন গুজব ছড়িয়ে মানুষ হত্যার বিচারের দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
প্রসঙ্গত, শনিবার (২০ জুলাই) সকালে ঢাকার উত্তর পূর্ব বাড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে রেনুকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। মেয়েকে ভর্তির জন্য ওই স্কুলে খোঁজ নিতে যান তিনি। এসময় তার কথাবার্তায় সন্দেহ হলে গুজবে লোকজন জড়ো হয়ে ছেলেধরা বলে গণপিটুনি দিলে মারা যান রেনু। এরপর লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার উত্তর সোনাপুর গ্রামে রেনুর বাবার বাড়িতে রোববার (২১ জুলাই) রাতে তাকে দাফন করা হয়।