মঙ্গলবার, দুপুর ১টা। হাটহাজারীতে বিশেষ অভিযানে যান মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। নেতৃত্বে ছিলেন অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম অঞ্চলের ‘ক’ সার্কেলের পরিদর্শক জীবন বড়ুয়া।
অভিযানে পৌরসভার ৮ নম্বর মিরের খিল ওয়ার্ডের বড়ুয়া পাড়া এলাকার একটি বসতঘরে মেলে ফেনসিডিল। শপিং ব্যাগে মোড়ানো অবস্থায় ওই বাড়িতে লুকানো ছিল ১০ বোতল ফেনসিডিল। এসময় আটক করা হয় মৃত মনমোহন বড়ুয়ার ছেলে গৌতম বড়ুয়াকে (৫০)।
এ ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিদর্শক শফিয়ার রহমান বাদী হয়ে হাটহাজারী মডেল থানায় একটি মামলা (নম্বর-২৭) দায়ের করেন। পরদিন (বুধবার) সকালে পুলিশ গৌতমকে আদালতে প্রেরণ করে।
এটুকু পর্যন্ত কোনো অস্বাভাবিকতা নেই। কিন্তু আটক গৌতমের স্ত্রী হ্যাপি বড়ুয়া এ প্রতিবেদককে দিয়েছেন ভিন্ন তথ্য।
হ্যাপি বড়ুয়া অভিযোগ করে বলেন, ‘উদ্ধারকৃত ফেনসিডিল আমাদের বসতঘর থেকে অনেকদূরে পাওয়া গেছে। এসব তারা কারো প্ররোচনায় সাজিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমার স্বামীকে আটকের পর ওই কার্যালয়ের উপ-পরিদর্শক শফিয়ার রহমান নামে এক কর্মকর্তা আমাকে তাদের কার্যালয়ে আসতে বলেন। আমি ঘণ্টাখানেকের মধ্যে তাদের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে ওই কর্মকতার সঙ্গে দেখা করি।
এসময় তিনি আমাকে বলেন, তাকে ২৫ হাজার টাকা দিতে হবে। নইলে আমার স্বামীকে ৩০ বোতল ফেনসিডিল দিয়ে চালান দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে এক বছরেও জামিন হবে না। জামিন নিলেও হাইকোর্ট থেকে নিতে হবে।
পরে অনেক দরকষাকষির পর সেই ২৫ হাজার টাকা নেমে আসে ৬ হাজার টাকায়। আর বলা হয়, এ টাকা দিলে ৩০ বোতল নয়, ১০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার দেখিয়ে চালান দেওয়া হবে।’
তবে অভিযুক্ত উপ-পরিদর্শক শফিয়ার রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে বলে দাবি করেন। আটক গৌতমের স্ত্রীর সঙ্গে এ ধরনের কোনো কথোপকথন হয়নি বলেও দাবি করেন তিনি।
যদিও গৌতমের স্ত্রীর সঙ্গে তার (উপ-পরিদর্শক) ফোনালাপের রেকর্ড জয়নিউজের প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত আছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ওই অভিযানে নেতৃত্বে থাকা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জীবন বড়ুয়া জয়নিউজকে বলেন, এ ধরনের কোনো তথ্য আমার জানা নেই। তবে এভাবে উদ্ধারকৃত মাদকদ্রব্য কমিয়ে বা বাড়িয়ে মামলা দায়ের করার সুযোগ নেই। এ রকম কোনো ঘটনা ঘটেছে কি-না তা আমি খতিয়ে দেখছি।