নগরের তিন রুটে মেট্রোরেল (এমআরটি) চালুর পরিকল্পনা করছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন।
কালুরঘাট থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত সাড়ে ২৬ কিলোমিটার (কিমি), সিটি গেট থেকে শাহ আমানত সেতু পর্যন্ত সাড়ে ১৩ কিমি এবং অক্সিজেন থেকে একে খান বাস স্টপ পর্যন্ত সাড়ে ১৪ কিমি পর্যন্ত এ এমআরটি লাইন হবে।
শুক্রবার (২৬ জুলাই) চসিকের সম্মেলন কক্ষে বাসস্থান ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড কনসালটেন্টস লিমিটেড নামের পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের অধীনে ম্যাস রেপিড ট্রানজিটের (এমআরটি) প্রাক-যোগ্যতা সমীক্ষা (প্রিজিবিলিটি) প্রতিবেদন উপস্থাপন অনুষ্ঠানে এসব কথা জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানের অধীনে বুয়েটের ড. সোহরাব উদ্দিন, ড. এম আজাদুর রহমান, মো. মাহবুবুল আলমসহ ২৫ জনের উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন টিম ম্যাস রেপিড ট্রানজিটের (এমআরটি) প্রাক-যোগ্যতা সমীক্ষা (প্রিজিবিলিটি) প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ডেপুটি টিম লিডার মাহবুবুর রহমান তথ্যচিত্র উপস্থাপন করেন।
তথ্যচিত্রে জানানো হয়, সাড়ে ৫৪ কিমির তিনটি লাইনে ৪৭টি স্টেশনের প্রস্তাব করা হয়েছে। একেকটি স্টেশনের দূরত্ব হবে ৭০০ মিটার থেকে ২ দশমিক ৪ কিলোমিটার। ঘণ্টায় ৪৫ কিমি গড় গতিবেগ থাকবে মেট্রোরেলের। ২০ কিমি দীর্ঘ এমআরটির মাধ্যমে ঘণ্টায় দুই প্রান্তে ৬০ হাজার যাত্রী পরিবহন সম্ভব।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান মো. জহিরুল আলম দোভাষ।
মেয়র বলেন, চট্টগ্রাম দ্বিতীয় বৃহত্তম বিভাগীয় শহর, বন্দরনগর, বাণিজ্যিক রাজধানী। প্রধানমন্ত্রীর ভিশন বাস্তবায়ন করতে হলে বন্দরের সর্বোচ্চ সক্ষমতা বাড়াতে হবে।
তিনি বলেন, ৬০ বর্গমাইলের শহরে প্রতিদিন চাপ বাড়ছে। প্রয়াত মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী মেট্রোরেলের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু বিরোধিতা বা মামলার কারণে হয়নি।
জনবান্ধব গণপরিবহনের জন্য এমআরটির পরিকল্পনা নিয়েছেন জানিয়ে মেয়র বলেন, এটি অনেক আগে নেওয়া উচিত ছিল। নগরের জন্য মঙ্গল হতো। এখন ফ্লাইওভারের জন্য এমআরটি লাইন নির্মাণে প্রতিবন্ধকতা আসছে। সিডিএ নো অবজেকশন সনদ (এনওসি) দিলে এমআরটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেব।
তিনি বলেন, ৩২টি সেবা সংস্থা। কেউ কারও প্রতিদ্বন্দ্বী নয়। একমাত্র সিটি করপোরেশনের মেয়র ভোটে নির্বাচিত। মেয়রের কাছে জনপ্রত্যাশা বেশি। তাই সরকারের অংশ হিসেবে মেয়রকে সহযোগিতা করা উচিত। একে অপরের পরিপূরক।
এমআরটি বিষয়ে বন্দর, রেলওয়েসহ সব সংস্থার সঙ্গে আলোচনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন মেয়র।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সিডিএ চেয়ারম্যান দোভাষ বলেন, প্রকল্প শুরুর আগে সব সংস্থার সঙ্গে আলোচনা ও সমন্বয় দরকার। এখানে বন্দর ও রেলওয়ের প্রতিনিধি থাকলে ভালো হতো। মিরসরাই ও হাটহাজারী পর্যন্ত সম্প্রসারণের সুযোগ রাখার কথা এসেছে।
যে প্রকল্প শুরু হয়েছে সেটি বন্ধ করা ঠিক হবে না। বন্দরকেও বাঁচাতে হবে। এটি দেশের লাইফ লাইন। এমআরটির ডিপো নগরের বাইরে হাটহাজারী বা মিরসরাই নিয়ে যেতে হবে। নগরে ৬০ একর জায়গা পাওয়া কঠিন।
সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, প্রকৌশলী আলী আশরাফ,চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, প্রকৌশলী মো. হারুন, চুয়েটের উপাচার্য রফিকুল আলম, স্থপতি আশিক ইমরান, প্রকৌশলী সুভাষ বড়ুয়া, চসিকের প্রধান প্রকৌশলী কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী প্রবীর কুমার সেন, চসিকের প্রধান পরিকল্পনাবিদ রেজাউল করিম ও সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী হাসান বিন শামস।