চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) পাশকৃত ৩৩৯ কোটি ১৮ লাখ টাকার বাজেটকে গবেষণাহীন ও অনুর্বর বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের প্রক্রিয়া হিসেবে দেখেছে শাখা ছাত্র ইউনিয়ন।
রোববার (২৮ জুলাই) বিকেলে সংগঠনটির চবি সংসদের দপ্তর সম্পাদক জিতায়ন চাকমা স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে সংগঠনটি।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, চবি সংসদের সভাপতি ধীষণ প্রদীপ চাকমা ও সাধারণ সম্পাদক গৌরচাঁদ ঠাকুর অপু এক যৌথ বিবৃতিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটকে বিশ্ববিদ্যালয়কে গবেষণাহীন ও অনুর্বর বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করার প্রক্রিয়া হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘ছাত্র প্রতিনিধিবিহীন সিনেট অধিবেশনের মাধ্যমে পাশকৃত এ বাজেটে শিক্ষার্থীদের মতামত প্রতিফলিত হয়নি। বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, চবি সংসদ দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কে গবেষণা ও শিক্ষার্থীবান্ধব উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে তৈরি করার লক্ষ্যে ছাত্রদের মৌলিক সংকট- আবাসন, পরিবহন, লাইব্রেরি-মেডিকেলের আধুনিকায়ন, ক্যান্টিনে ভর্তুকি, অনৈতিক বর্ধিত ফি বাতিল, গবেষণায় বরাদ্দ বাড়ানোসহ ছাত্রদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন করে যাচ্ছে। কিন্তু এ বাজেটে শিক্ষার্থীদের মতামতকে গুরুত্ব না দিয়ে গবেষণাখাতে মোট বাজেটের মাত্র ১.২৩ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হয় যা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার খাতকে নিরুৎসাহিত করার সামিল।’
‘নেতৃবৃন্দ মনে করেন, ৩৩৯ কোটি ১৮ লাখ টাকার বাজেটের মধ্যে শুধুমাত্র শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ভাতা বাবদ ২১২ কোটি ৭০ লাখ টাকা (মোট বাজেটের ৬২.৭১ শতাংশ) বরাদ্দ দেওয়া হয় তখন সে বাজেট আর শিক্ষার্থীবান্ধব বাজেট থাকে না। বরং এ বাজেটের মাধ্যমে সুকৌশলে বিশ্বব্যাংক প্রস্তাবিত ২০ বছর মেয়াদী উচ্চশিক্ষার কৌশলপত্র বাস্তবায়ন করে শিক্ষাকে সংকুচিত করা ও গবেষণাখাতকে ধ্বংস করার পায়তারা করা হচ্ছে। কেননা এ বাজেটে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ আয় বাড়ানোর প্রবণতা লক্ষণীয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে অভ্যন্তরীণ আয় বাড়ানোর জন্য শিক্ষার্থীদের পকেট কেটে নামে-বেনামে বিভিন্ন ধরণের অনৈতিক ফি আদায় করার প্রচেষ্টা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন নয়।’
‘বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন চবি সংসদ মনে করে, একটি উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কে গবেষণাবান্ধব বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করা এখন সময়ের দাবি। বিশ্ববিদ্যালয়কে শুধু সার্টিফিকেট বিতরণের জায়গা হিসেবে সীমাবদ্ধ না রেখে উন্নততর গবেষণার মাধ্যমে নতুন নতুন জ্ঞান সৃজন, জ্ঞানচর্চা ও জ্ঞান বিতরণ বিশ্ববিদ্যালয়ের মৌলিক উদ্দেশ্য হওয়া উচিত। তাই গবেষণা খাতে পর্যাপ্ত বরাদ্দ ছাড়া এ উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়।
সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি না থাকার কারণে ছাত্রস্বার্থপরিপন্থী এ ধরণের বাজেট পাশ করা সহজ হয়। তাই ছাত্র ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অবিলম্বে চাকসু নির্বাচন আয়োজন করে সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি নিশ্চিত করার এবং ২০১৯-২০ অর্থবছরের এ বাজেটকে বাতিল করে শিক্ষার্থী ও গবেষণাবান্ধব বাজেট প্রণয়ন করার আহ্বান জানান।