নগরের লালখান বাজারে ইয়াছমিন আক্তার (১২) নামে এক গৃহকর্মীকে গরম পানি ঢেলে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই বাসার ব্যংকার বখতিয়ারের স্ত্রী আরেফা আক্তারকে (২৮) আটক করা হয়।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) রাতে চাঁনমারি রোড়ের এপিক ৩১৪ কমর পার্ক বিল্ডিংয়ের আট তলার একটি ফ্ল্যাটে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় যুবক সোহেল রহমান জানান, ওই বাসায় কাপড় ধোয়ার জন্য তানিয়া নামের আরেক গৃহকর্মী কাজ করে। গতকাল (সোমবার) সে আমাকে জানায় আটতলার বখতিয়ার সাহেবের বাসায় কাজের মেয়েকে গরম পানি ঢেলে পুড়িয়ে দিয়েছে। মেয়েটির অবস্থা খুব খারাপ। ওই পরিবার মেয়েটিকে আটকে রেখেছে। তিনদিন ধরে সে ঝলসানো শরীর নিয়ে কাতরাচ্ছে। তার চোখে রক্ত জমে গেছে। তার চিকিৎসার প্রয়োজন। মেয়েটিকে যেভাবেহোক বের করে আনতে হবে। পরে আমিসহ স্থানীয় আরো কয়েকজন মিলে পুলিশকে বিষয়টি জানানোর পার তারা এসে তাকে উদ্ধার করে।
গৃহকর্মী ইয়াছমিন জানায়, রান্নাঘরে বক্সে রাখা পিঠা বানানোর খন্তি নেওয়ার জন্য আমি উপরে উঠেছিলাম। খন্তি নেওয়ার সময় আমার হাত থেকে পড়ে খন্তিটি ভেঙ্গে যায়। তাই আমাকে ম্যাডাম বেত দিয়ে অনেক মারছে। পরে চুলায় থাকা গরম পানি আমার গায়ে ঢেলে দেয়। আমার গায়ের চামড়া উঠে যাচ্ছিল। আমি কান্না করছিলাম খুব। তখন ম্যাডাম আমাকে খন্তি দিয়ে চোখে ও মাথায় আরো মারছে। পরে আমাকে তখন রুমে বন্দি করে রাখে। আমাকে কোথাও বের হতে দেয়নি। আমি ব্যাথা সহ্য করতে পারছিলাম না তাই আপুকে (তানিয়া) বলছি মানুষকে বলে আমাকে বের করতে।
এ ব্যাপারে খুলশী থানার এসআই খাজা এনাম এলাহী জয়নিউজকে বলেন, স্থানীয়দের তথ্যের ভিত্তিতে আমরা চাঁনমারি রোড়ের ইপিক ডেভেলোপারের বিল্ডিংয়ে যাই। যাওয়ার পর অনেক ডাকাডাকির পরও পরিবারটি ঘরের দরজা খুলছিলেন না। একপর্যায়ে আমরা দরজা ভাঙ্গার প্রস্তুতি নিই। তখন তারা দরজা খুলতে বাধ্য হয়। দরজা খোলার পর মেয়েটি জানায়, ওই বাসার গৃহকর্ত্রী মেয়েটিকে দীর্ঘদিন ধরে আমানবিক নির্যাতন করতো। মেয়েটির গলা, পিঠ ও হাতের অনেকটা অংশ ঝলসানো দেখা যায়। তার চোখে ও শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে বেশকিছু জখমের চিহ্ন দেখতে পায়। ঘটনার সত্যতা পেয়ে আমরা গৃহকর্ত্রীকে আটক করে থানায় নিয়ে আসি।
খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রণব চৌধুরী জয়নিউজকে বলেন, ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় ওই গৃহকর্ত্রীকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। মেয়েটি এতিম। তার মা-বাবা কেউ নেই। তার কোনো নিকট আত্মীয়স্বজনও শহরে নেই। তাই পুলিশ বাদি হয়ে গৃহকর্ত্রীর বিরুদ্ধে শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেছে।