রাষ্ট্রীয় নানা গুরুত্বপূর্ণ কাজে ভীষণ ব্যস্ত থাকতে হয় তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদকে। এই ব্যস্ততার মধ্যেই প্রিয় শিক্ষকের খোঁজ নেওয়ার জন্য ঠিক সময় বের করে নিয়েছেন হাছান মাহমুদ।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) সকাল ১১টায় মন্ত্রী তাঁর শৈশবের স্মৃতি জড়ানো বিদ্যাপীঠ সরকারি মুসলিম হাই স্কুলের ইংরেজির শিক্ষক মোহাম্মদ ইসহাকের বায়েজিদের বাসায় যান।
এসময় প্রিয় শিক্ষকের পা ছুঁয়ে সালাম করেন হাছান মাহমুদ। এতে চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি মোহাম্মদ ইসহাক। প্রিয় শিক্ষকের সান্নিধ্যে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তথ্যমন্ত্রীও। একই ব্যাচের শিক্ষার্থী জামাল নাসের চৌধুরী ও এস এম ইলিয়াছ দুলালও তথ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন।
চট্টগ্রামের অন্যতম নামি বিদ্যাপীঠ সরকারি মুসলিম হাই স্কুলে ১৯৬৫ থেকে ৯৪ সাল পর্যন্ত শিক্ষকতা করেছেন মোহাম্মদ ইসহাক। সর্বশেষ প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে থাকা অবস্থায় অবসর নেন তিনি।
১৯৭৮ সালে এই স্কুল থেকেই কৃতিত্বের সঙ্গে এসএসসি পাশ করেন হাছান মাহমুদ। সেই হাছান মাহমুদ আজ তথ্যমন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক।
অনেকদিন পর ছাত্র হাছান মাহমুদকে কাছে পেয়ে তাদের মধ্যে আলাপচারিতা জমে উঠে। চলে স্মৃতিচারণ। এসময় শিক্ষক মোহাম্মদ ইসহাক বলেন, ‘আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে মাস্টার্স করেছি, আবার বৈরুতে আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকেও ইংরেজিতে এমএ করেছি, এরপর শিক্ষকতায় এসেছি।’ এসময় তথ্যমন্ত্রী বলে উঠেন, ‘স্যারের যোগ্যতা এত বেশী যে, শিক্ষকতায় না আসলে পাকিস্তানের সচিব হতেন।’ মোহাম্মদ ইসহাক বলেন, ‘আমি তো সেখানে (প্রশাসনের কর্মকর্তা) যাব না বলে আগে থেকেই ঠিক করেছিলাম।’
আলাপের একপর্যায়ে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, স্কুলজীবনে রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ায় আপনি স্যার একবার আমার বাবাকে অভিযোগ দিয়ে বলেছিলেন আমি পড়ালেখার চেয়ে রাজনীতি নিয়ে ঘুরছি বেশি। এরপর বাবা আমাকে প্রচন্ড পিটিয়েছিলেন। এসময় প্রিয় ছাত্রের স্মৃতি রোমন্থনে শিক্ষক মো. ইসহাক আবারো আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ইসহাক স্যার সেসময়ে বাইসাইকেল নিয়ে চট্টগ্রাম শহরে ছাত্র-ছাত্রীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজ নিতেন। স্যারের মতো গুণী শিক্ষকরা তাদের মেধা, প্রজ্ঞা ও অভিজ্ঞতা দিয়ে দেশে আলোকিত মানবসম্পদ তৈরিতে অসামান্য অবদান রেখেছেন। স্যারের অসামান্য অবদান ভুলে যাবার নয়।
প্রিয় শিক্ষকের পা ছুঁয়ে সালাম করে তার কাছ থেকে বিদায় নেন ড. হাছান মাহমুদ। শিক্ষক মোহাম্মদ ইসহাকও তাঁর মাথায় হাত বুলিয়ে দোয়া করেন।