নগরের মইজ্জ্যারটেক পশুর হাট থেকে ৪০ হাজার টাকা দিয়ে একটি গরু কেনেন পটিয়ার বাসিন্দা শামসুল ইসলাম। গরু কিনে হাটের মধ্য দিয়ে ফিরছিলেন তিনি।
এসময় মনসা পূজার জন্য পাঁঠা কিনে বের হচ্ছিলেন কর্ণফুলী এলাকার বাসিন্দা সঞ্জয় পাল। দাম জিজ্ঞেস করতে সঞ্জয় বলেন, ‘৪০ হাজার টাকা।’
পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় শামসুল ইসলাম হেসে বললেন, ‘আমার গরুর দামও ৪০ হাজার টাকা!’ সঙ্গে সঙ্গে হেসে উঠলেন সঞ্জয়ও। তিনি বললেন, ‘গরু আর ছলের দাম এক অই গেইয়ে (গরু আর ছাগলের দাম এক হয়ে গেছে)।’
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বিকেল ৫টায় এমন দৃশ্যের দেখা মিলল নগরের কর্ণফুলী থানার মইজ্জ্যারটেক পশুর হাটে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বন্ধের দিন হওয়াতে বাজারে প্রচুর ক্রেতা। কেউ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন পছন্দের পশু। কেউবা এখনো দেখছেন। আশায় আছেন দাম কমার। যারা কিনছেন তারা জানালেন পশুর দাম এখনো বেশি। হয়ত ঈদের আগের দিন দাম কমতে পারে। তাই বিক্রেতারা এখন দাম ছাড়ছেন না।
গরু কিনতে আসা শাহেনশাহ নামে এক ক্রেতা জয়নিউজকে বলেন, ‘গতকাল রাতেও এসেছিলাম। দাম বেশি হওয়াতে কিনিনি। আজও দেখছি দাম আগের মতোই আছে। ঈদের আগের দিন পর্যন্ত দেখব। সেদিনও দাম না কমলে বেশি দামেই কিনতে হবে।’
বিক্রেতারা জানান, এ বাজারে কুষ্টিয়া, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা, বগুড়া, রাজশাহী ইত্যাদি এলাকা থেকে প্রচুর গরু এসেছে। এছাড়া কোরবানির ঈদের পরপরই হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মনসা পূজা থাকায় প্রচুর পাঁঠাও উঠেছে বাজারটিতে। বিক্রিও হচ্ছে বেশ।
কুষ্টিয়া থেকে গরু নিয়ে আসা জয়নাল নামে এক বিক্রেতা জয়নিউজকে বলেন, ‘২৫টি গরু নিয়ে এসেছি। ৮টি বিক্রি হয়েছে। আশা করি ঈদের আগেই অন্য গরুগুলো বিক্রি হয়ে যাবে। যদি না হয় তাহলে লোকসান হয়ে যাবে।’
এ বাজারের সবচেয়ে বড় গরুটির দাম হাঁকা হয়েছে সাড়ে ছয়লাখ টাকা। গরুটি চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে নিয়ে এসেছেন শরীফ আলী। তিনি বলেন, ‘অনেক যত্ন করে গরুটি বড় করেছি। বাছুর থাকতে গরুটি কিনেছিলাম। গরুটির পিছনে এখন পর্যন্ত আমার চারলাখ টাকা খরচ হয়েছে। দাম চেয়েছি সাড়ে ছয়লাখ। তবে পাঁচলাখ টাকা পেলেও বিক্রি করে দেব।’
মইজ্জ্যারটেক পশুর হাটের ইজারাদার আকবর আলী খান জয়নিউজকে বলেন, ‘বেচা-কেনা জমে উঠেছে। শহর থেকে একটু দূরে হলেও দাম হাতের নাগালে থাকায় অনেকেই এ বাজারে আসছেন পশু কিনতে। আগামী দুইদিন ক্রেতা আরো বাড়বে বলে আশা করছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘সিটি করপোরেশন নির্ধারিত হাজারে ৫০ টাকা করেই হাসিল নেওয়া হচ্ছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থাও ভালো। পুরো বাজার সিসিটিভি ক্যামেরা দিয়ে নিয়ন্ত্রিত। এছাড়া পর্যাপ্ত পুলিশও রয়েছে। তাই ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েই নির্ভয়ে লেনদেন করতে পারছেন।’