প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত, তারা খুব চেনা। দিন-রাত আমাদের বাড়িতেই যারা ঘোরাঘুরি করত, তারাইতো সেই খুনিরূপে বিরাজমান হলো, তারাইতো খুনি হিসেবে আসলো।’
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শুক্রবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জিয়াউর রহমানকে মেজর থেকে প্রমোশন দিয়ে দিয়ে মেজর জেনারেল করা হলো। মাসে একবার হলেও সে আমাদের বাড়িতে আসত; কখনো একা, কখনো খালেদা জিয়াকে সঙ্গে নিয়ে আসত। ডালিম, ডালিমের শাশুড়ি, ডালিমের বউ, দিনরাত আমাদের বাসায় ঘোরাঘুরি করত।’
‘মেজর নূর, কামালের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের সময় ওসমানীকে যখন সশস্ত্র বাহিনীর অধিনায়ক করা হলো, তখন তার এডিসি কামালকে নিয়োগ দেওয়া হলো। তার সঙ্গে, একইসঙ্গে, একই রুমে থাকত, একই সঙ্গে তারা এডিসি ছিল। আর এরাই এই হত্যাকাণ্ডটা চালাল। আর মোশতাকতো মন্ত্রী ছিল।’ যোগ করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘মোশতাক সংবিধান লঙ্ঘন করে রাষ্ট্রপতি পুরস্কার পাওয়ার পর জিয়াউর রহমানকে সেনাপ্রধান করল। জিয়াউর রহমান কীভাবে এতো বিশ্বস্ত হলো যে তাকেই সেনাপ্রধান করল? সেটা কর্নেল ফারুক রশীদ বিবিসিতে যে ইন্টারভিউ দিয়েছিল, সেই ইন্টারভিউ থেকে জানতে পারেন। তারা যে জিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে এবং জিয়ার কাছ থেকে ইশারা পেয়েছে, জিয়া তাদের আশ্বস্ত করেছিল যে, এগুলো করলে তারা সমর্থন পাবে। সেটা তো তারা নিজেরাই বলে গেছে। তাহলে এরা কারা ছিল? এরা কী স্বাধীনতায় বিশ্বাসী? এরা কী মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করত? না তারা তা করত না।’
তিনি বলেন, ‘অনেক চক্রান্তের পরও বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে জিডিপি সাত ভাগ জাতির পিতার সময় অর্জিত হয়েছে। চালের দাম ১০ টাকা থেকে কমে তিন টাকায় এসেছিল। যখন একটা ভালো দিক দেশের জন্য এসেছে, মানুষের ভেতরে একটা স্বস্তি ফিরে এসেছে, চরম আঘাতটা কিন্তু তখনই এসেছে। যখন দেখল এত চক্রান্ত করে স্বাধীন বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা ব্যাহত করা যাচ্ছে না, তখনই তারা চরম আঘাত হানল ৭৫-এর পনেরোই আগস্ট জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যার মধ্য দিয়ে।’
তিনি আরও বলেন, ‘শুধু পাকিস্তান ভালো থাকবে, তাদের চাওয়া ছিল এটাই। বাংলাদেশ যেন উপরে উঠতে না পারে। বাংলাদেশ যেন স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে টিকে থাকতে না পারে। যাতে তারা বলতে পারে বাংলাদেশ রাষ্ট্র হয়ে, স্বাধীনতা অর্জন করে ভুল করেছে।’
সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, মতিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিম, আবদুল মতিন খসরু, জাহাঙ্গীর কবির নানক প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এবং উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন।