হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব মনসা পূজা রোববার (১৭ আগস্ট)। পূজা, নৈবদ্য ও পাঁঠা (মর্দ ছাগল) বলির মাধ্যমে নগর ও উপজেলায় দেবী মনসার পূজা করা হবে।
মনসা হলেন একজন লৌকিক হিন্দু দেবী। তিনি সর্পদেবী। প্রধানত বাংলা অঞ্চল এবং উত্তর ও উত্তরপূর্ব ভারতের অন্যান্য অঞ্চলে তাঁর পূজা প্রচলিত আছে। সর্পদংশনের হাত থেকে রক্ষা পেতে, সর্পদংশনের প্রতিকার পেতে, প্রজনন ও ঐশ্বর্যলাভের উদ্দেশে তাঁর পূজা করা হয়। মনসা ঘট স্থাপন করে পূজা করা হয়। মনসা নাগ-রাজ (সর্পরাজ) বাসুকীর ভগিনী এবং ঋষি জরৎকারুর (জগৎকারু) স্ত্রী। তাঁর অপর নামগুলো হলো বিষহরি বা বিষহরা (বিষ ধ্বংসকারিণী), নিত্যা (চিরন্তনী) ও পদ্মাবতী।
পুরাণ ও কিংবদন্তি অনুসারে, মনসার পিতা শিব ও স্বামী জরৎকারু মনসাকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। মনসার সৎ-মা চণ্ডী (শিবের স্ত্রী পার্বতী) তাঁকে ঘৃণা করতেন। এ কারণে মনসা অত্যন্ত উগ্র স্বভাব ও অসুখী এক দেবী। কোনো কোনো ধর্মগ্রন্থে আছে, শিব নয়, ঋষি কাশ্যপ হলেন মনসার পিতা। মনসাকে ভক্তবৎসল বলে বর্ণনা করা হলেও, যিনি তাঁর পূজা করতে অস্বীকার করেন, তাঁর প্রতি তিনি নির্দয়। জন্ম-সংক্রান্ত কারণে মনসার পূর্ণ দেবীত্ব প্রথমে অস্বীকার করা হয়েছিল। তাই মনসার উদ্দেশ্য ছিল দেবী হিসেবে নিজের কর্তৃত্ব স্থাপন করা এবং একটি একনিষ্ঠ মানব ভক্তমণ্ডলী গড়ে তোলা।
সাধারণত মনসার মূর্তি পূজা হয় না। সীজ বৃক্ষের শাখায়, ঘটে বা সর্প-অঙ্কিত ঝাঁপিতে মনসার পূজা হয়। তবে কোথাও কোথাও মনসার মূর্তিও পূজিত হয়।
এদিকে, মনসা পূজা উপলক্ষে নগর ও উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সাদা পূজা ও পাঁঠা বলির প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। নগরের চট্টেশ্বরী কালী মন্দির, সদরঘাট কালী মন্দির, ব্যাটারি গলি, হেমসেন লেইন, জামাল খান সিঁড়ির গোড়া, উত্তর ও দক্ষিণ নালা পাড়া, হাজারী লেইন, রাজাপুর লেইন, বক্সিরহাট, নবগ্রহ বাড়ি ইত্যাদি স্থানে পাঁঠা বলি করা হবে। এছাড়া সাদা পূজাও গ্রহণ করা হবে। সকাল থেকেই এসব স্থানে পাঁঠা বলি শুরু হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
চট্টেশ্বরী কালী মন্দিরের সেবায়েত দেবু চক্রবর্তী জয়নিউজকে বলেন, সকাল থেকেই মন্দিরে পূজা শুরু হবে। পূজা শেষ হওয়ার পরেই পাঁঠা বলি শুরু হবে। এবার আড়াইশ’র মতো পাঁঠা বলি হতে পারে।