পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক বলেছেন, যেকোনো দিন রোহিঙ্গা শরণার্থী প্রত্যাবাসন শুরু হবে। তবে বিষয়টি (প্রত্যাবাসন) এখনও আলোচনার টেবিলে রয়েছে।
রোববার (১৮ আগস্ট) রোহিঙ্গা বিষয়ক এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্রাটেজিক স্টাডিস এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরানো কবে শুরু হবে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে কোনো সুনির্দিষ্ট দিন-তারিখ জানাতে রাজি হননি পররাষ্ট্র সচিব।
তিনি বলেন, পর্দার অন্তরালে অনেক কিছু হচ্ছে, চেষ্টা হচ্ছে। তবে সব চেষ্টা সফল হবে- এমন নয়। আগামী কয়েক সপ্তাহ আমরা রোহিঙ্গাদের উৎসাহিত করব, যাতে তারা নিজ দেশে ফিরে যায়। এটা শুধু বাংলাদেশের নয়, এটা রোহিঙ্গাদেরও প্রধান উদ্দেশ্য। যদি তারা ফিরে না যায়, তবে শুধু জমির অধিকার নয়, সব অধিকার হারাবে তারা।
বাংলাদেশ প্রত্যাবাসনকে সবসময় অগ্রাধিকার দিচ্ছে এবং এ বিষয়ে বাংলাদেশ কাজ করে যাচ্ছে। অনেকে রোহিঙ্গা সমস্যাকে বাংলাদেশ বনাম মিয়ানমারের সমস্যা বলে বর্ণনা করে। কিন্তু বিষয়টি তেমন নয়; এটি প্রকৃতপক্ষে মিয়ানমার এবং তাদের লোকদের সমস্যা, বলেন শহীদুল হক।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান তিনটি। প্রথমটি প্রত্যাবাসন; পরেরটি পুনর্বাসন এবং সবশেষ সমাজে আত্মস্থ করে নেওয়া।
বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আত্মস্থ করে নেবে কিনা- এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অবশ্যই না। বাংলাদেশ একটি জনবহুল দেশ এবং স্থানীয় জনগণের সঙ্গে তাদের আত্মস্থ করার সুযোগ নেই।
রোহিঙ্গা ইস্যুটিতে আন্তর্জাতিকীকরণ করার ওপর জোর দিয়ে মিজানুর রহমান বলেন, বাংলাদেশকে এ বিষয়ে আরও সচেষ্ট হতে হবে।
প্রসঙ্গত, গত ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর থেকে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা। এর আগে বিভিন্ন সময়ে আরও প্রায় পাঁচ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় আশ্রয় নেয়। ২০১৭ সালে আসা রোহিঙ্গাসহ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের ৩১টি ক্যাম্পে জড়ো করে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।
এরপর কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় তাদের প্রত্যাবাসনের প্রক্রিয়া চালানো হয়। কিন্তু দফায় দফায় চেষ্টা করেও প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করা যায়নি। গত বছরের শেষ সময়ে এবং চলতি বছরের শুরুতে প্রত্যাবাসন শুরুর কথা দিয়েও সে কথা রাখেনি মিয়ানমার।