কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে চলেছে জম্মু ও কাশ্মীরের পরিস্থিতি।
এদিকে ল্যান্ডলাইন ফোন, ইন্টারনেট পরিষেবা কিছুটা শিথিল করা হয়েছে বলে সরকার দাবি করলেও সাধারণ কাশ্মীরিদের অভিজ্ঞতা সে কথা বলছে না।
ভারতের সংবাদ সংস্থা এএনআই জানায়, শনিবার সকাল থেকে পাঁচ জেলায় চালু হয়েছে টুজি ইন্টারনেট পরিষেবা। জম্মু, রেয়াসি, সাম্বা, কাঠুয়া, এবং উধমপুর- এই পাঁচ জেলায় প্রাথমিক পরিষেবা চালু হয়েছে।
তবে দিল্লিতে বসবাসকারী এক কাশ্মীরি জানিয়েছেন, পরিবারের লোকজনকে থানায় গিয়ে লম্বা লাইন দিয়ে কথা বলতে হচ্ছে-আর তারা সেখানে বড়জোর মিনিটখানেকই কথা বলার সুযোগ পাচ্ছেন।
দিল্লিতে থাকেন বারামুলার মেয়ে সাদাফ ওয়ানি জানান, তার আব্বু ছোট মেয়েকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে থানা থেকে ফোন করেছিলেন-কিন্তু সে কথাটা মেয়েকে বলার আগেই লাইন কেটে যায়।
মোবাইল ফোন তো দূরস্থান, সাধারণ কাশ্মীরিদের বাড়িঘর-ব্যবসা-দোকানপাটে এখনও ল্যান্ডলাইন পর্যন্ত চালু হয়নি। বস্তুত মোবাইল, টেলিফোন বা ইন্টারনেটে কাশ্মীর উপত্যকা বাকি পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে ঠিক দু’সপ্তাহ ধরে।
এদিকে পঞ্চাশ হাজারেরও বেশি ল্যান্ডলাইন চালু হয়ে গেছে- প্রশাসনের এমন দাবির বিষয়ে সাদাফ জানান, ‘দেখুন, গোটা কাশ্মীর জুড়ে, শ্রীনগর-বারামুলা-সোপোরে আমার আত্মীয়স্বজনরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন। আমি ক্রমাগত তাদের নম্বর ঘুরিয়ে চলেছি, কিন্তু কাউকে এখনও পাইনি। দিল্লিতে আমি এমন কাউকেই জানি না যে কাশ্মীরে কাউকে ল্যান্ডলাইনে ধরতে পেরেছে বলে। কাজেই সরকারের এই দাবিটা খুবই বিভ্রান্তিকর।’
কারফিউ, ইন্টারনেট বন্ধ, ইত্যাদি নিয়ে একটি মামলার প্রেক্ষিতে দেশের শীর্ষ আদালত ইতোমধ্যেই বলে দিয়েছে, এক রাতে কাশ্মীরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে না। ওখানে শান্তি ফেরাতে সময় লাগবে। কেন্দ্র সেই সময় নিক। আমরা চাই উপত্যকায় শান্তি বিরাজ করুক।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়, সন্ত্রাসবাদীরা যাতে ইন্টারনেট ব্যবহার করে নাশকতা না করতে পারে, সে কারণেই এই পদক্ষেপ।
বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেওয়ার পর গোটা রাজ্য জুড়ে ছিল কারফিউ, স্তব্ধ হয়ে পড়ে থাকে সেখানের জনজীবন। সর্বত্র ভারতীয় সেনাদের টহল। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের গুলিতে অনেকে নিহত হন এবং গ্রেপ্তার করা হয় সহস্রাধিককে।