প্রধানমন্ত্রীর কাছে শো অফ করতেই স্ট্যান্ডবাজি ছালামের!

কাজ শেষ না হলেও প্রধানমন্ত্রীকে দেখানোর জন্য ঢাকঢোল পিটিয়ে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম গত ফেব্রুয়ারি মাসে পতেঙ্গা আউটার রিং রোড দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেন। এরপর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত পরিদর্শনে আসেন।

- Advertisement -

এর আগে ২২ ফেব্রুয়ারি সিডিএর আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রায় ৪০টি পোলে সড়কবাতির জন্য বিদ্যুৎ সংযোগ দেয় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। কিন্তু মাসের পর মাস কোনো বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করেনি সিডিএ। এ বিষয়ে নিজস্ব কোনো ফান্ডও নেই তাদের।

- Advertisement -google news follower

তাহলে কেনইবা লোক দেখানো বিদ্যুৎ সংযোগ নিলেন সিডিএ- এমন প্রশ্ন দর্শনার্থী ও নগর পরিকল্পনাবিদদের।

আরও পড়ুন: সিডিএ গার্লস স্কুল: প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম-স্বেচ্ছাচারিতা, নেপথ্যে ছালাম

- Advertisement -islamibank

এদিকে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় ভুতুড়ে পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে পতেঙ্গা এলাকায়। সন্ধ্যার পর আলো না থাকায় দর্শনার্থীর সংখ্যা যেমন কমে গেছে ঠিক একইভাবে বেড়েছে অপরাধও।

প্রধানমন্ত্রীর কাছে শো অফ করার জন্য এটি একটি স্ট্যান্ডবাজি উল্লেখ করে নগর পরিকল্পনাবিদ প্রকৌশলী দেলোওয়ার মজুমদার বলেন, চট্টগ্রামের উন্নয়নের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী খুবই আন্তরিক। এ ধরণের কাজে তাঁর (প্রধানমন্ত্রী) সদিচ্ছাকে অপচয় করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সিডিএর কাজ হচ্ছে পরিকল্পিত নগরায়ন করা। কিন্তু সিডিএ পারেন না এমন কাজও অনেক করেছেন। যার মাশুল এখন নগরবাসীকে দিতে হচ্ছে। আমরা এখন দেখি ফ্লাইওভারেও বিদ্যুৎ থাকে না। পতেঙ্গার মতো একটি পর্যটন এলাকাও অন্ধকারে থাকে। বর্তমান চেয়ারম্যান বিভিন্ন মাধ্যমে স্বীকার করেছেন এ বিষয়ে তাদের কোনো ফান্ড নেই। সেটি সত্য কথা। তাহলে কথা হচ্ছে কেন তারা শো অফ করেছে।

আরও পড়ুন: এমপি ওহাবকে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহার কেড়ে নিলেন ছালাম!

এ অবস্থায় সৈকতে বিদ্যুৎ সরবরাহে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার মো. মাহবুবুর রহমান স্বাক্ষরিত একটি চিঠি সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ বরাবর পাঠিয়েছেন।

তবে এ ধরণের কোনো চিঠি পাননি বলে জানিয়েছেন সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ। তিনি জয়নিউজকে বলেন, আমি এ ধরনের কোনো চিঠি পাইনি। তবে প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে বিদ্যুৎ বিভাগ নিজ থেকে পতেঙ্গা সৈকতে সড়কবাতি লাগিয়েছিল। আবার তারা নিজেরাই সড়কবাতির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে।

প্রধানমন্ত্রীর কাছে শো অফ করতেই স্ট্যান্ডবাজি ছালামের!

তবে বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে ভিন্ন কথা। তারা বলছে, সিডিএর তৎকালীন চেয়ারম্যান আবদুচ ছালামের আবেদনের প্রেক্ষিতেই বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছিল।

বিতরণ অঞ্চল চট্টগ্রাম দক্ষিণাঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী (হালিশহর) মো. গিয়াস উদ্দিন জয়নিউজকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত পরিদর্শনে আসার আগে সিডিএর আবেদনের প্রেক্ষিতে আমরা প্রায় ৪০টি পোলে সড়কবাতির জন্য বিদ্যুৎ সংযোগ দেই। কিন্ত ৩০ মে পর্যন্ত সিডিএর কাছে বিল বকেয়া হয় ২ লাখ ১৭ হাজার টাকা। তাদেরকে চিঠি দিয়ে ও মৌখিকভাবে বারবার বলা হলেও এই বিল দিতে তারা অপারগতা করে। এমনকি সিডিএর এ খাতে কোনো ফান্ড না থাকার কথা বলে আমাদেরকে বিদ্যুৎ সংযোগ বিছিন্ন করার অনুরোধ করলে আমরা জুনের এক তারিখ বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করি।

আরও পড়ুন: ছালামের বিরুদ্ধে একের পর এক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ

এদিকে সিডিএর এমন কর্মকাণ্ড নিয়ে হাস্যরসের সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্নজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা করছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিডিএর এক কর্মকর্তা জয়নিউজকে বলেন, সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম বাড়বাড়ি করে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়েছিলেন। তখন বিষয়টি নিয়ে আমরা আপত্তি জানিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি তা শুনেননি। কারণ সিডিএ’র কাছে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কোনো বরাদ্দ থাকে না।

এ বিষয়ে জানতে সিডিএর সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি জয়নিউজকে বলেন, সিডিএ সম্পর্কে আমার কোনো বক্তব্য নেই। আমার সময়ে সবকিছু ঠিক ছিল। কিভাবে ঠিক ছিল সেটা অন্য বিষয়।

রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সিডিএর কোনো বরাদ্ধ নেই, তবুও কেন বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য আবেদন করেছেন- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে রাজি নই। বর্তমান চেয়ারম্যান যা বলে তা লিখে দিন।

জয়নিউজ/এসআই
KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM