হাটহাজারীতে সরকারি চিকিৎসাকেন্দ্রের ওষুধ মিলছে ফার্মেসিতে। রোগীদের জন্য বরাদ্দকৃত বিনামূল্যের এসব ওষুধ কৌশলে একটি চক্র বাজারে বিক্রি করছে বলে জানা গেছে।
তবে উপজেলা প্রশাসন বেশ কয়েকবার অভিযান পরিচালনা করলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের যথাযথ তদারকির অভাবে কয়েকটি চক্র এমন অপকর্ম দীর্ঘদিন ধরে চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) সকাল ১০টায় উপজেলার চিকনদন্ডী ইউনিয়নের নতুনপাড়া এলাকার শেখ আহমদ মার্কেটের আকমল শাহ্ নামে একটি ফার্মেসিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রুহুল আমিন। এসময় প্রায় ১০-১৫ হাজার টাকার ওষুধ জব্দ করা হয়।
অভিযানে সহযোগিতা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) সম্রাট খিসা ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নিয়াজ মোর্শেদসহ উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
এছাড়া ইউএনও চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে টানা তিনদিনের অভিযানে প্রায় ১৬ হাজার পিস সরকারি ওষুধ জব্দ করেছিলেন।
এদিকে অভিযানের খবর পেয়ে এসব ফার্মেসির মালিকরা পালিয়ে যাওয়ার কারণে কাউকে আটক কিংবা সাজা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে অভিযানের পর এসব ওষুধের দোকান বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। এসব ফার্মেসির মালিকদেরকে আইনের আওতায় আনার ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান ইউএনও মোহাম্মদ রুহুল আমিন।
তিনি আরও জানান, নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে এসব দোকানে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। এসব ফার্মেসিতে বিক্রয় নিষিদ্ধ বিপুল পরিমাণ সরকারি ওষুধ, অনুমোদনহীন ভারতীয় ও যৌন উত্তেজক ওষুধ মিলেছে। এছাড়া সরকার কর্তৃক বরাদ্দকৃত জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীও পাওয়া যায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ফার্মেসির মালিক জয়নিউজকে বলেন, অর্ডার দিলে সরকারি কিছু কর্মকর্তা আছে, যারা ওষুধ দোকানে পৌঁছে দেয়। এরা শুধু হাটহাজারী উপজেলায় নয়, পাশাপাশি রাউজানেও এসব সরকারি ওষুধ সরবরাহ করে থাকে। তবে এসব ওষুধগুলোর মোড়কে ওষুধের মূল্য উল্লেখ নেই। বেসরকারি ওষুধের সঙ্গে গ্রুপ মিলিয়ে দাম নির্ধারণ করে এগুলো ক্রেতাদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী বলেন, বিনামূল্যে সরবরাহের সরকারি ওষুধ খোলাবাজারে ক্রয়-বিক্রয় দণ্ডনীয় অপরাধ। এ রকমের সরকারি ওষুধ ফার্মেসিতে পাওয়ার বিষয়টি আসলে বেশ দুঃখজনক ও নিন্দনীয় ঘটনা। বিনামূল্যের ওষুধ কীভাবে ফার্মেসিতে মিলছে বা কার মাধ্যমে যাচ্ছে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসনকে এসব বিষয়ে তদারকি করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, এ অপকর্মের সঙ্গে আমার আওতাধীন স্বাস্থ্য বিভাগের কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী জড়িত থাকলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাছাড়া এক্ষেত্রে আমি স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি। পাশাপাশি আমাদের সরকারি চিকিৎসাকেন্দ্রগুলোতে যথাযথ তদারকি করা হলে ওষুধ খোলাবাজারে আসা বন্ধ হবে বলে মনে করেন তিনি।