সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসকে ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ হিসেবে গণ্য করে বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিচারের দাবি জানিয়েছে জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা।
বুধবার (২১ আগস্ট) সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এসব দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিমল কান্তি দে।
তিনি বলেন, মাতৃভূমি বাংলাদেশে মানসম্মান নিয়ে শান্তিতে সম-অধিকারসহ বসবাস করার যে প্রত্যাশা ও অধিকার তা নিশ্চিতে আবেদন করি। আমরা আন্তরিকভাবে চাই আন্তর্জাতিক সমাজে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল হোক। আমরা নিরাপত্তা চাই, সম-অধিকারে বাঁচতে চাই।’
এক প্রশ্নের জবাবে পরিষদের সাবেক সভাপতি পৌর মেয়র দেবাশীষ পালিত বলেন, ‘বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক চেতনার দেশ। এই দেশে আমরা সবাই মিলেমিশে বসবাস করি। কিন্তু মাঝে মধ্যে দুষ্কৃতকারীরা বৌদ্ধ বিহার, গির্জা ও মঠ-মন্দির ভাঙচুর করে, সাম্প্রদায়িক উস্কানি দেয়। সেই ঘটনাগুলো যাতে না ঘটে অথবা কোথাও ঘটলে সরকারের সংশ্লিষ্ট পর্যায়ে যেন দ্রুত বার্তা পৌঁছে দেওয়া যায় সেজন্য আমরা জাতীয় পর্যায়ে ১১ সদস্যের কোর কমিটি গঠনের দাবি করছি।’
সংবাদ সম্মেলনে সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠন, সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস সৃষ্টিকারীদের মানবতাবিরোধী হিসেবে চিহ্নিত করে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনের মাধ্যমে শাস্তির ব্যবস্থা করা, সারাদেশে বেদখল মঠ-মন্দির ও দেবোত্তর সম্পত্তি উদ্ধার এবং সংরক্ষণের প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন, দুর্গা পূজায় চারদিন সরকারি ছুটি ঘোষণা, অর্পিত সম্পতির মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য প্রতি জেলায় বিশেষ আদালত গঠন এবং এরশাদ সরকারের সময়ে সৃষ্ট বাংলা নববর্ষের তারিখ বিভ্রাট অবসানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, শুক্রবার (২৩ আগস্ট) ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উৎসব সারাদেশে ধর্মীয় মর্যাদায় উদযাপন করা হবে।
এ উপলক্ষে বিভিন্ন জেলায় শোভাযাত্রা, মহানাম সংকীর্ত্তন, ধর্মসভা, বস্ত্র বিতরণ, রক্তদান, লীলাপ্রদর্শনী, মহাপ্রসাদ বিতরণসহ বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতারা এসব কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবেন। বাংলাদেশে সর্বপ্রথম জন্মাষ্টমী উৎসব সাড়ম্বরে পালন চট্টগ্রাম থেকেই শুরু করা হয়েছিল। তাই চট্টগ্রামেও চারদিনের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তপন কান্তি দাশ, কার্যকরী সভাপতি ডা. মনোতোষ ধর, সহসভাপতি সাধন ধর, সহসভাপতি ও মহাশোভাযাত্রা উপ-পরিষদের আহ্বায়ক অলক দাশ, লায়ন দুলাল চন্দ্র দে, পরেশ চন্দ্র চৌধুরী, মহাশোভাযাত্রা উপ-পরিষদের সদস্য সচিব লায়ন আশীষ কুমার ভট্টাচার্য্য, কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক লায়ন তপন কান্তি দাশ, প্রকৌশলী আশুতোষ দাশ, সাধন চৌধুরী, জাতীয় জন্মাষ্টমী উৎসব পরিষদের আহ্বায়ক বাবুল ঘোষ বাবুন, সদস্য সচিব রত্নাকর দাশ টুনু, রতন আচার্য্য, শিবু প্রসাদ দত্ত, ‘মাসিক জ্যোতির্ময়’ প্রকাশক এস প্রকাশ পাল, প্রকৌশলী সুভাষ গুহ ও রুমকী সেনগুপ্ত প্রমুখ।