চন্দনাইশের দুর্গম পাহাড়। পাহাড়জুড়ে সবুজের সমারোহ। বিশাল পাহাড়ি এলাকাজুড়ে রয়েছে বাগান। আরেকটু সহজ করে বললে পেয়ারার বাগান। এই ভর মৌসুমে যেখানে শোভা পাচ্ছে পেয়ারা আর পেয়ারা।
বলছিলাম চন্দনাইশের কাঞ্চননগরের বিখ্যাত পেয়ারা বাগানের কথা। কাকডাকা ভোরেই এখন ব্যস্ততা শুরু হয়ে যায় এখানে।
কাঞ্চননগরের পাহাড়ি এলাকার বাগান থেকে এখন পেয়ারা সংগ্রহে ব্যস্ত ব্যাপারীরা। ভোরে পেয়ারা সংগ্রহ করে সকাল ৮টার মধ্যে নিয়ে আসেন দক্ষিণ চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় পেয়ারার বাজার রৌশন হাটে।
বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকেই বিকিকিনিতে জমজমাট রৌশন হাট। লাল কাপড়ে মোড়ানো সারি সারি পেয়ারার ভার। বিক্রেতারা জানান, সকাল ১১টা পর্যন্ত চলবে এই বিকিকিনি।
স্বাদে-গন্ধে অতুলনীয় হওয়ায় কাঞ্চননগরের পেয়ারার আলাদা কদর রয়েছে। সুস্বাদু এই পেয়ারা সংগ্রহ করতে তাই চট্টগ্রাম নগরের ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি ছুটে আসেন চকরিয়া, বাঁশখালী, আনোয়ারা, সীতাকুণ্ডসহ বিভিন্ন উপজেলার ব্যবসায়ীরা।
এখানে পেয়ারা বিক্রির পদ্ধতিটা একটু ভিন্ন। ডজন কিংবা কেজিতে নয়, এখানে পেয়ারা বিক্রি হয় ভার হিসেবে! বিক্রেতারা কোনো ভারের দাম হাঁকেন ৮০০ টাকা, আবার কোনোটির ১ হাজার ৬শ’ টাকা। পেয়ারার সাইজ অনুযায়ী পেয়ারার এই দাম হাঁকেন তারা।
বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ব্যবসায়ীরা দর কষাকষি করে পেয়ারা কিনেন। ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি অনেকে শখ করেও এখানে আসেন কাঞ্চননগরের পেয়ারা স্বাদ পেতে।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়,, শুধু চন্দনাইশ উপজেলার কাঞ্চনাবাদ, ছৈয়দাবাদ ও লালুটিয়া পাহাড়ে ছোট-বড় মিলিয়ে ৭০০ থেকে ৮০০ পেয়ারা বাগান রয়েছে। এসব বাগানের মোট আয়তন প্রায় ৩০০ হেক্টর। এসব বাগানে উৎপাদিত পেয়ারা বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়া হয় রৌশন হাটসহ উপজেলার আশপাশের হাটে।
রৌশন হাটের পেয়ারার ব্যাপারী আফজান জয়নিউজকে বলেন, ব্যাপারীরা শ্রাবণ মাস থেকে তিন মাসের জন্য পেয়ারা বাগানগুলো কিনে নেন। বাগানের পরিধি অনুযায়ী দাম নির্ধারিত হয়। তারপর পুরো সিজনে চলে পেয়ারা সংগ্রহ। সূর্য উঠতেই শ্রমিকরা লেগে পড়েন পেয়ারা সংগ্রহের কাজে। সকাল ৮টার মধ্যেই বাজারে নিয়ে আসা হয় ভারভর্তি পেয়ারা।