চসিক নির্বাচন: শাহাদাত-বক্করের দ্বন্দ্বে বিকল্প আসলাম চৌধুরী?

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পরাজয়ের পর স্থানীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি বিএনপি। তবে আসন্ন ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। এর আগে বগুড়ায় নিজেদের ছেড়ে দেওয়া আসনে উপনির্বাচনে জয় পায় ধানের শীষ। নির্বাচনকে সামনে রেখে মাঠ গোছানো শুরু করছে দলটির সম্ভাব্যপ্রার্থীরা।

- Advertisement -

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচন চট্টগ্রামের আগেই হবে। নির্বাচনের সবুজ সংকেত পেলেও চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী কে হবে তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে অনেক হেভিওয়েট প্রার্থী মেয়র পদে নির্বাচন করতে চায়। নগরের রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন সবচেয়ে আলোচিত বিষয় চসিক নির্বাচন। বিভিন্ন আড্ডায়-সমাবেশে চসিক নির্বাচন নিয়ে আলোচনা চলছে।

- Advertisement -google news follower

২০১৫ সালে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন এম মনজুর আলম। তিনি আওয়ামী লীগ থেকে বিএনপিতে যোগ দিয়ে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টাও হন। কিন্তু নির্বাচনের দিন সকাল ১০টায় দলের নির্দেশে ভোট বর্জন নিয়ে তাকে সংবাদ সম্মেলন করতে হয়। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ ছিলেন তিনি। পরে তিনি বিএনপির সব পদ থেকে পদত্যাগ করেন। এখন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত মনজুর।

বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, সম্ভাব্য মেয়র পদে তিনজনের নাম শোনা যাচ্ছে। এরা হলেন, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আসলাম চৌধুরী, মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর।

- Advertisement -islamibank

মেয়র নির্বাচন নিয়ে নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্করের মধ্যে স্নায়ু যুদ্ধ চলছে। দুই নেতাই নগরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে এখন থেকে ঘরোয়া সভা করছে। দুই নেতার অনুসারীদের মধ্যেও চলছে নানা বাকবিতণ্ডা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তারা নিজেদের নেতার নামে বিভিন্ন ব্যানার পেস্টুন বানিয়ে মেয়র নির্বাচন নিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন।

নগর বিএনপির দুই নেতার মধ্যে যখন মেয়র পদ নিয়ে যুদ্ধ চলছে, তখন অনেকে এক্ষেত্রে মেয়র নির্বাচনে তৃতীয় কোনো প্রার্থীকে নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছেন। সেক্ষেত্রে আলোচিত নাম হিসেবে শোনা যাচ্ছে তিনবছর ধরে কারাবন্দী থাকা বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব আসলাম চৌধুরী। নগরের কোন্দল মেটাতে আসলাম চৌধুরীকে মেয়র প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করলেও আশ্চর্য্য হওয়ার কিছু নেই।

তবে কারাবন্দি থেকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মতো গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনে লড়তে পারবে কিনা সেটিও দেখার বিষয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির একাধিক নেতা।

এছাড়া মেয়র পদে আরো বেশ কয়েকজন নেতার নাম শোনা যাচ্ছে। তার মধ্যে রয়েছে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মীর হেলাল ও নগর বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আবু সুফিয়ান।

মেয়র প্রার্থী যেই হোক না কেন, ৪১টি সাধারণ ওয়ার্ড ও ১৫টি সংরক্ষিত নারী আসনে কাউন্সিলর পদে প্রার্থী দিবে বিএনপি। এজন্য মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে দলটি। দলের পক্ষ থেকে কাউন্সিলর পদে সম্ভাব্য প্রার্থীদের একটি তালিকা তৈরির কাজ চলছে।

নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন জয়নিউজকে বলেন, বিএনপি সিটি নির্বাচনে অংশ নিবে। তবে তার আগে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ আছে কি-না তা দেখবে বিএনপি। তামাশার কোনো নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না।

প্রার্থীতার বিষয়ে তিনি বলেন, দল যদি আমাকে মনোনয়ন দেয় আমি অবশ্যই নির্বাচন করব। আর চট্টগ্রাম হচ্ছে বিএনপির ঘাঁটি।

এদিকে মেয়র পদে প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ আছে উল্লেখ করে নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর জয়নিউজকে বলেন, চট্টগ্রামে বিএনপি সাংগঠনিকভাবে অনেক শক্তিশালী। আমরা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত আছি। দল যদি আমাকে প্রার্থী করে আমি নির্বাচন করব এবং জয় ছিনিয়ে আনতে পারব ইনশাল্লাহ।

অন্যদিকে বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য মীর হেলাল জয়নিউজকে বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। তবে বিএনপি আর কোনো প্রহসনের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। সরকারকেই নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে। দল যদি আমাকে নির্বাচন করতে বলে আমি নির্বাচন করব।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জয়নিউজকে বলেন, আমরা সিটি নির্বাচনসহ অন্যান্য নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে ইতিবাচক চিন্তাভাবনা করছি। আমরা এখন দল গোছানোর কাজ করছি। ঢাকাসহ তিন সিটি নির্বাচনের এখনও অনেক দেরি। এ ব্যাপারে দলীয়ভাবে কোনো সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি।

১৯৯০ সালে সিটি করপোরেশনে উন্নীত হওয়ার পর প্রথম মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী। এরপর বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন ১৯৯১ থেকে ১৯৯৩ সাল, আওয়ামী লীগের প্রার্থী এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ১৯৯৩ থেকে ২০১০ সাল, বিএনপির প্রার্থী মোহাম্মদ মনজুর আলম ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল মেয়র হিসেবে পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। এরপর বর্তমান মেয়র নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন মেয়র নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করছেন।

জয়নিউজ/বিআর
KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM