চট্টগ্রাম ওয়াসার পরিচালনা বোর্ডে প্রকৃত গ্রাহক প্রতিনিধি মনোনয়ন দেওয়া হয়নি এখনো। যদিও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় বেঁধে দেয়া সময় পেরিয়ে গেছে। এনিয়ে সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বিরুদ্ধে ছলচাতুরির অভিযোগ তুলে ক্রেতা-ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণকারী সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। সেইসঙ্গে বিগত ১০ বছরে চলমান সকল প্রকল্পের অনিয়ম, দুর্নীতি তদন্তে প্রধানমন্ত্রী এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) হস্তক্ষেপ চেয়েছে সংগঠনটি।
ক্যাবের গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের উন্নয়নে সবসময় আন্তরিক এবং তাঁর কারণে চট্টগ্রাম ওয়াসার জন্য বিপুল বরাদ্দ দিয়েছেন। ওয়াসার বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালকের আমলে উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও স্বজনপ্রীতির ঘটনা ঘটেছে।
ব্যবস্থাপনা পরিচালক স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ ও ৫২তম বোর্ড সভার নির্দেশও উপেক্ষা করে কালক্ষেপণসহ নানা ছলচাতুরির আশ্রয় নিচ্ছেন। ৫২তম বোর্ড সভায় মেয়াদোত্তীর্ণ ও সদ্য অব্যাহতিপ্রাপ্ত বোর্ড সদস্য মো. সোলেমান আলম শেঠকে আমন্ত্রণ জানিয়ে ওয়াসা আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করেছে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, গ্রাহক প্রতিনিধির তালিকায় ক্রেতা-ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান ক্যাবের প্রতিনিধিকে বাদ দিয়ে চিহ্নিত ভুমিদস্যু এবং কতিপয় বিতর্কিত ব্যক্তির নাম পাঠানোর পাঁয়তারা করছেন। ভোক্তা প্রতিনিধি থেকে ক্যাবের প্রতিনিধির নাম বাদ গেলে আদালতে আইনি প্রতিকারের আশ্রয় নেয়া হবে।
বিবৃতিতে ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, গ্রাহক প্রতিনিধি মনোনয়ন নিয়ে চট্টগ্রাম ওয়াসার গড়িমসির বিষয়ে ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেন ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব মহানগরের সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারন সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, যুগ্ম সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি আবদুল মান্নান প্রমুখ।
ওয়াসার কাজের দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ তুলে বিবৃতিতে বলা হয়, বর্তমান সরকারের আমলে বিপুল পরিমাণ অর্থ চট্টগ্রাম ওয়াসাকে প্রদান করা হলেও কাজের মান, স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। প্রকল্পের নামে পুকুর চুরি যেমন ঘটেছে, স্বজনপ্রীতিও লুটপাটও ঘটেছে। সে কারণে বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালকের আমলে বাস্তবায়িত সকল উন্নয়ন প্রকল্পের সুষ্ঠু তদন্ত সম্পাদনের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রতি আহবান জানানো হয়।
প্রসঙ্গত, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ধারা নং ৫ এর ১৬ উপ-ধারায় বলা আছে, কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) দেশের সর্বত্র ভোক্তাদের প্রতিনিধিত্ব করবেন। আর তারই ধারাহিকতায় ক্যাব সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ভোক্তা স্বার্থ সংশ্লিষ্ট নীতি নির্ধারণী ও কমিটিগুলিতে প্রতিনিধিত্ব করে আসলেও চট্টগ্রাম ওয়াসায় তা মানা হয়নি বলে অভিযোগ ক্যাবের।
জয়নিউজ/কাউসার/পিডি