শরৎ এলেই সনাতনী হৃদয়ে বাজে উৎসবের সুর। আগাম প্রস্তুতির আমন্ত্রণ জানায় প্রকৃতি। ইশারা-ইঙ্গিতে শুনিয়ে যায় ঘণ্টা, কাঁসর, ঢাকের তাল। শরতের রূপ-লাবণ্য জানান দিচ্ছে, শিগগির মর্তে্য আসছে দেবী দুর্গা।
৪ অক্টোবর ষষ্ঠীপূজার মধ্যদিয়ে শুরু হবে পাঁচ দিনব্যাপী দুর্গাপূজা। এর আগেই মণ্ডপে মণ্ডপে চলে যাবে প্রতিমা। তাই এখন ব্যস্ত সময় কাটছে মৃৎশিল্পীদের।
কাদা-মাটি, খড়-কাঠ নিয়ে এখন দিন-রাত সমানে কাজ করতে হচ্ছে মৎশিল্পীদের। সরেজমিন নগরের সদরঘাট কালি বাড়ি, সদরঘাট বোস গলি, হাজারি গলি ও দেওয়ানজী পুকুরে দেখা গেছে ব্যস্ততার এ চিত্র।
মৎশিল্পীরা ব্যস্ত প্রতিমা তৈরির কাজে। নগরের পাশাপাশি দূর গ্রামের মণ্ডপেও স্থান পাবে তাদের তৈরি প্রতিমা। আবার কয়েকটি স্থানে মৃৎশিল্পী ভাড়া করে এনে মণ্ডপের সামনেই চলছে প্রতিমা তৈরির আয়োজন।
সদরঘাট তপন পাল শিল্পালয়ের মৃৎশিল্পী তপন পাল জয়নিউজকে বলেন, মাসখানেক আগে থেকে প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু করেছি। এবছর ৩০টি প্রতিমা তৈরির অর্ডার পেয়েছি।
তিনি আরও বলেন, আমার এখানে প্রতিমার দাম ২৫ হাজার টাকা থেকে শুরু। মূলত অর্ডারের উপর প্রতিমার দাম নির্ভর করে।
এ বছর প্রতিমা তৈরির জন্য ভারত থেকে মৃৎশিল্পী এনেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ কারণে এবার প্রতিমার সৌন্দর্যটা অন্যরকম হবে। এজন্য খরচও একটু বেশি হচ্ছে। কয়েকদিন পর থেকেই ফিনিশিংয়ের কাজ শুরু করবো।
এদিকে ৩০টি প্রতিমার অর্ডার পেয়েছেন সদরঘাট এলাকার নূর উদ্দিন কলোনির লোকনাথ শিল্পালয়ের মৃৎশিল্পী অমল পালও। তিনি জয়নিউজকে বলেন, প্রতিমার মাটির প্রলেপ শুকিয়ে যাওয়ার পর রঙ-তুলির কাজ শুরু করবো। রঙের কাজ সবচেয়ে কঠিন। দিন-রাত খেটে কাজ করলেও এখন আগের মতো তেমন লাভ নেই। কারণ যেভাবে প্রতিমা তৈরির সরঞ্জামের দাম দিন দিন বাড়ছে সেভাবে বাড়ছে না প্রতিমা তৈরির বাজেট। বলতে গেলে বাপ-দাদার ঐতিহ্য ধরে রাখতেই এই পেশায় লেগে আছি।
হাজারী লেইনের মৃৎশিল্পী সমীর বলেন, এটা তো একপ্রকার শিল্প। কিন্তু মানুষ এটাকে ছোট কাজ মনে করে। এখন জিনিসপত্রের অনেক দাম। অনেক সময় খরচের চেয়েও কম দামে প্রতিমা বিক্রি করতে হয়। কারণ প্রতিমা থেকে গেলেতো ক্ষতি আরও বেশি হবে।