রওশন এরশাদকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ঘোষণার পর পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পার্টির ঘোষিত চেয়ারম্যান জিএম কাদের এমপি।
বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বনানীর চেয়ারম্যান কার্যালয়ে তিনি এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। এসময় তিনি এরশাদের বিভিন্ন নির্দেশনা পাঠ করে শোনান।
এর আগে বেলা সোয়া ১২টার দিকে বিরোধী নেতার গুলশানের বাসায় সংবাদ সম্মেলনে রওশন এরশাদকে দলের চেয়ারম্যান ঘোষণা করা হয়।
জিএম কাদের বলেন, ‘পার্টির নিয়মের বাইরে কেউ কাউকে চেয়ারম্যান ঘোষণা করতে পারে না। পার্টির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আমিই পার্টির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছি।’
তিনি বলেন, একটি সংবাদ সম্মেলনের খবর শুনেছি। কেউ পার্টির শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে তার বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: এবার রওশনকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ঘোষণা!
‘রওশন এরশাদকে সম্মান করি, যতটুকু শুনেছি, তিনি নিজে থেকে নিজের কথা বলেননি’, মন্তব্য করেন জিএম কাদের।
তিনি বলেন, কেউ নিজেকে রাজা ঘোষণা করেলই রাজা হয়ে যায় না। রাজা হতে হলে রাজ্য থাকতে হয়, প্রজা থাকতে হয়। তাই কে কি ঘোষণা করেছে তাতে জাতীয় পার্টির কিছু যায় আসে না। এতে অস্থির হওয়ার কিছু নেই। জাপা ভাঙেনি, ভাঙনের মুখেও পড়েনি।
গঠনতন্ত্রের ২০/ধারা ক উপধারার উদ্ধৃতি দিয়ে জিএম কাদের বলেন, ‘আমাকে এরশাদ সাহেব তার অবর্তমানে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত করেছেন। গঠনতন্ত্রের ২০ ধারার ক উপধারায় বলা আছে, চেয়ারম্যান জাপার যেকোনো ব্যক্তিকে নিয়োগ ও নিজের স্থলাভিষিক্ত করতে পারবেন। এইচএম এরশাদ আমাকে তার স্থলাভিষিক্ত করে গেছেন। মৃত্যুর আগের আমাকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। মৃত্যুর পর কী হবে সেটা গঠনতন্ত্রে বলা নাই।’
তিনি দাবি করেন, কাউন্সিল ছাড়া অন্য কাউকে স্থলাভিষিক্ত করা যাবে না। কিন্তু তার (এইচএম এরশাদ) অবর্তমানে আমাকে স্থলাভিষিক্ত করে গেছেন। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নাকি চেয়ারম্যান তা এরশাদ সাহেব নিজে সাংগঠনিক আদেশে বলে গেছেন।
এরশাদের মৃত্যুর পর প্রথম প্রেসিডিয়ামের বৈঠকে আমাকে চেয়ারম্যান হিসেবে অভিনন্দিত করা হয় বলেও দাবি করেন তিনি।
পার্লামেন্টারি বোর্ড গঠন নিয়ে উত্থাপিত অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এরশাদ সাহেব জীবিত থাকা অবস্থায় যেভাবে বোর্ড গঠন করেছিলেন, সেভাবেই করা হয়েছে। শুধু একজন সদস্য নিজে থেকে সরে যাওয়ায় তার স্থানে কাজী ফিরোজ রশীদকে যুক্ত করা হয়েছে। জাতীয় নির্বাচন ও একটি উপ-নির্বাচনে একই বোর্ড নাও হতে পারে বলেন জিএম কাদের।
এ সময় তার অনুসারী নেতা-কর্মীরা আনিসুল ইসলাম মাহমুদের বিরুদ্ধে শ্লোগান দেন।
সংবাদ সম্মেলনে সাবেক মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, সৈয়দ আবু হাসান বাবলা এমপি, গোলাম কিবরিয়া টিপু এমপি, অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি, অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, এস এম ফখর-উজ-জামান জাহাঙ্গীর, কাজী মামুনুর রশিদ, আলমগীর সিকদার লোটন, এমরান হোসেন মিয়া, নাজমা আক্তার এমপি, উপদেষ্টা মেজর (অব.) আশরাফউদ দৌলা, মাহমুদুর রহমান মাহমুদ, ভাইস চেয়ারম্যান সরদার শাহজাহান, আহসান আদেলুর রহমান এমপি, মোস্তাকুর রহমান, মস্তফা আল মাহমুদ, নুরুল ইসলাম তালুকদার এমপি, যুগ্ম-মহাসচিব হাসিবুল ইসলাম জয়, সুলতান আহমেদ সেলিম, শফিউল্লাহ শফি, আমির উদ্দিন আহম্মেদ ডালু, আবদুল হামিদ ভাষানী, নির্মল দাস, মো. হেলাল উদ্দিন, সুলতান মাহমুদ, খোরশেদ আলম খুশু, আনিসুর রহমান খোকন, এম এ রাজ্জাক খান, সুজন দে, মঞ্জুরুল হক, ইফতেকার আহসান হাসান, মিজানুর রহমান মিরু, আলাউদ্দিন মৃধা, এম এ সাত্তার, মিজানুর রহমাসহ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।