তীরে এসেই ডুবল তরী। চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ২.১ কিলোমিটার দূরে থাকা অবস্থায় ভারতের মহাকাশযান চন্দ্রায়ন-২ এর সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তাই চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে নামা প্রথম কোনো মহাকাশযানের বিরল সম্মান অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে চন্দ্রায়ন-২। সবমিলিয়ে চন্দ্রপৃষ্ঠ স্পর্শের সৌভাগ্যবঞ্চিত ভারত।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে এতথ্য নিশ্চিত করা হয়।
সুখবরটা শুনতে শুক্রবার দিনভর প্রতীক্ষায় ছিল গোটা ভারত। বিজ্ঞানীরা জানতেন শেষ ১৫ মিনিট তাদের চূড়ান্ত পরীক্ষার মধ্যদিয়ে যেতে হবে।
দিবাগত রাত ২টা ২০ মিনিটে ইসরোর চেয়ারম্যান কে শিবন জানান, চন্দ্রায়ন-২ এর সঙ্গে যোগাযোগ সম্ভব হচ্ছে না।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবরে বলা হয়েছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে গতিবেগ কমানো সম্ভব হয়নি মহাকাশযানটির। তাই সফট ল্যান্ডিং করেনি চন্দ্রায়ন-২। ঘণ্টায় প্রায় ৬ হাজার কিলোমিটার গতিবেগে চাঁদের ভূপৃষ্ঠে আছড়ে পড়েছে চন্দ্রায়নের ল্যান্ডার। অথচ সফট ল্যান্ডিংয়ের জন্য গতিবেগ থাকার দরকার ছিল ঘণ্টায় ৭ কিলোমিটার। এই অবতরণ প্রক্রিয়া একেবারেই স্বয়ংক্রিয়, তাই কোনোরকম হস্তক্ষেপের সুযোগ ছিল না।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মধ্যরাতে বেঙ্গালুরুতে ইসরোর কন্ট্রোলরুমে বসে অভিযান সরাসরি দেখছিলেন। ইসরোর চেয়ারম্যান কে শিবন শেষমেশ নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি। প্রধানমন্ত্রীকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলেন তিনি।
তবে ইসরোকে গোটা কর্মকাণ্ডের জন্যে কুর্নিশ জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, “সাহসী হন। আমরা যা অর্জন করেছি তা ছোট কোনো বিষয় নয়। আমি আপনাদের সঙ্গে রয়েছি।”
প্রসঙ্গত, এই অভিযান সফল হলে চতুর্থ দেশ হিসেবে চাঁদে অবতরণের গৌরব অর্জন করত ভারত। ইতোপূর্বে চন্দ্রপৃষ্ঠ ছোঁয়ার সৌভাগ্য হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন ও চীনের। ভারত তাদের এই চন্দ্রাভিযানে খরচ করছে প্রায় ১ হাজার কোটি ভারতীয় রুপি। গত ২২ জুলাই শ্রী হরিকোটা মহাকাশ স্টেশন থেকে ৬৪০ টন ওজনের চন্দ্রায়ন-২ যাত্রা শুরু করে।
এর আগে, ২০০৮ সালে দেশটি পাঠিয়েছিল চন্দ্রায়ন-১। তবে সেই অভিযানে মহাকাশযানটি শুধু চাঁদের কক্ষপথে পরিভ্রমণ করে। চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণ করেনি।
জয়নিউজ