বাংলাদেশ পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্ট পরিচালিত ‘কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড’ এর তফসিলি ব্যাংক হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনার উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গণভবন থেকে বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টা ৬ মিনিটে ভিডিও কনফারেন্সে ব্যাংকটির কার্যক্রম উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুলিশ সদস্যদের জীবনমানের উন্নয়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। আমরা সব সময় চেষ্টা করেছি আমাদের পুলিশ বাহিনী, যতটুকু সম্ভব তাদের পরিবার পরিজন যাতে সুস্থ থাকতে পারে। সে কারণেই আমি ট্রাস্ট (পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্ট) গঠন করে দিয়েছিলাম। পাশাপাশি তাদের যদি কোনো সাহায্য প্রয়োজন হয় শিক্ষা বা চিকিৎসার জন্য, সে সুবিধাটা এই ট্রাস্ট থেকে করে দিয়েছি। এবার আমরা ব্যাংক করে দিলাম।
পুলিশের জন্য বিশেষায়িত নতুন এই ব্যাংক নিয়ে দেশে বাণিজ্যিক ব্যাংকের সংখ্যা দাঁড়ালো ৫৯টিতে। পদাধিকার বলে কমিউনিটি ব্যাংকের প্রথম চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। এর আগে সশস্ত্র বাহিনী, বিজিবি ও আনসার-ভিডিপিকে ব্যাংক দেওয়ার কথা মনে করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেন, পুলিশ বাহিনীর জন্য বাকি ছিল, সেটাও করে দিলাম। সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করে যাওয়ায় পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুলিশ বাহিনী দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে, মানুষের একটা আস্থা, বিশ্বাসের জায়গা সৃষ্টি হয়েছে।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য দেন আইজিপি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি পুলিশের ব্যাংক প্রতিষ্ঠার উদ্যোগে আমরা সত্যি আনন্দিত। আশা করছি পুলিশের প্রতিটি সদস্য সচ্ছল হবে এবং বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যাবে।
কমিউনিটি ব্যাংকের মাধ্যমে সারাদেশে পুলিশ সদস্যদের বেতন দেয়া হবে। আপাতত পুলিশ সদস্যরাই হবেন এ ব্যাংকের শেয়ার হোল্ডার। এর লভ্যাংশ যাবে পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্টের অ্যাকাউন্টে। ট্রাস্টের মাধ্যমে ওই টাকা ব্যয় হবে পুলিশ সদস্যদের কল্যাণে। ব্যাংক লাভজনক হলে তিন বছর পর মূলধন জোগানের ওপর প্রত্যেকে নির্ধারিত হারে লভ্যাংশ পাবেন। এ ছাড়া পুলিশ সদস্যদের জমি ক্রয়, বাড়ি নির্মাণ, ব্যবসা উদ্যোগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে স্বল্প সুদে ঋণ সুবিধা দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে ব্যাংকটির।
ব্যাংকের মাধ্যমে পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্টের আয় বাড়লে সদস্য ও তাদের পরিবারের চিকিৎসায় আর্থিক সহায়তা বর্তমানের চেয়ে বাড়ানো হবে। সদস্যরা অবসর সুবিধা, সন্তানের শিক্ষাবৃত্তি, কারিগরি শিক্ষাবৃত্তি, ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপনসহ বিভিন্ন সুবিধা পাবেন এ ব্যাংকের মাধ্যমে। অন্য অনেক সংস্থার মতো পুলিশের নিজস্ব ব্যাংক প্রতিষ্ঠার পর সঠিক ও স্বচ্ছ লেনদেনের কারণে জনগণের মধ্যে পুলিশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে বলেও মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।