নিউ ইয়র্কের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারসহ তিনটি স্থানে ভয়াবহ হামলার ১৮ বছর পূর্তি আজ। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর, অর্থাৎ ১৮ বছর আগের ঠিক এই দিনেই যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে এক যোগে চালানো হয়েছিল চার-চারটি আত্মঘাতী বিমান হামলা। হামলায় নিহত হন ৭৮ টি দেশের মোট ২ হাজার ৯৯৬ জন মানুষ।
চারটি মার্কিন যাত্রিবাহী বিমান ছিনতাই করে নিউ ইয়র্কের স্থানীয় সময় ৯ টার দিকে চালানো হয় এই হামলা। দুটি বিমান ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের উত্তর ও দক্ষিণ টাওয়ারে আঘাত হানে। নিমিষে ধ্বসে পড়ে ভবন দুটি। আরেকটি বিমান নিয়ে মার্কিন প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর পেন্টাগনে হামলা চালায় জঙ্গিরা। তবে চতুর্থ বিমানটি নিয়ে জঙ্গিরা পূর্ব নির্ধারিত স্থানে হামলা চালাতে চাইলেও যাত্রীদের প্রতিরোধের মুখে সে প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। পেনসিলভেনিয়ার আকাশে বিধ্বস্ত হয় সেই বিমান।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে ‘সন্ত্রাসী হামলায়’ টুইন টাওয়ার ধ্বংস এবং ভার্জিনিয়ায় পেন্টাগন ভবন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঘটনা সম্পর্কে প্রথমেই যে প্রশ্নটি আসে তা হল, প্রকৃতপক্ষে কারা এটি ঘটিয়েছিল? যার উত্তর মেলেনি আজো। উল্লেখ্য, আজ পর্যন্ত পেন্টাগনে হামলার কোনো ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করা হয়নি।
পরিকল্পিতভাবে চালানো নারকীয় এ ধ্বংস ও হত্যাযজ্ঞের জন্য ইসলামি জঙ্গি সংগঠন আল কায়েদাকে দায়ী করে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা বিভাগ। গোয়েন্দা প্রতিবেদন অনুযায়ী, আল-কায়েদার তখনকার নেতা ওসামা বিন লাদেনই ছিলেন হামলার রূপকার। ২০১১ সালে পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে আত্মগোপন করে থাকা লাদেনকে হত্যা করে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ বাহিনী ‘নেভি সিল’।
অনেকে টুইন টাওয়ার ধ্বংস এবং ভার্জিনিয়ায় পেন্টাগন হামলার রহস্য উম্মোচিত না করা যুক্তরাষ্ট্র সরকারের জঙ্গি দমনের নামে ওয়ার্ল্ড সন্ত্রাসবাদ বা সাম্রাজবাদ কায়েম করা এবং যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ইরাক কিংবা আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার উৎস হিসেবে দেখেছেন কিন্তু ইতিহাস সাক্ষী আমেরিকাবাসির কাছে একদিন নাইন ইলেভেন হামলার নায়ক ও খলনায়ক খ্যাত যথাক্রমে আল কায়েদার লাদেন ও বুশ এর মধ্যে দায়ি কে সেটা আমেরিকাবাসি একদিন বিশ্ববাসীর নিকট প্রকাশ করবে।
৯/১১-এর কারণে আমেরিকা বা ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বসবাসরত মুসলিম অভিবাসী তথা মুসলমানরা কতখানি বিপদাপন্ন ও অসহায়ত্বের শিকার তা সে দেশের অভিবাসিরা মর্মে মর্মে উপলিব্ধি করছে। কারণ আমেরিকান ইউরোপীয়দের মধ্যে কেউ কেউ ৯/১১-কে দেখছেন পাশ্চাত্য সংস্কৃতির ওপর মুসলিম বিশ্বের আগ্রাসনরূপে, আবার অনেকে এটাকে কেন্দ্র করে মুসলিম বিশ্ব বলির পাঁঠা হোক তা চান না। এক কথায় ৯/১১-পরবর্তী আমেরিকার যুদ্ধনীতি সমর্থনযোগ্য নয়।
যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ারের এই বর্বর হামলার যারা নিহত হয়ছে সেসব পরিবারদের চেয়েও অনেক বেশি মূল্য দিতে হয়েছে নাইন ইলেভেনের কারণে অন্য অনেক নিরপরাধ রাষ্ট্র ও তার জনগনকে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রবাসি ঠিকই একদিন নাইন-ইলেভেনের ঘটনার মূল রহস্য উম্মোচিত করে কলঙ্ক ও দায়মুক্ত হবে বিশ্ববাসীর কাছে। সেই আশাবাদ আমেরিকাবাসির নিকট “আজ ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে টুইন টাওয়ার হামলার ১৮তম বার্ষিকীতে” আপামর সাধারন মানুষের।