খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় স্ত্রীকে হত্যা করে লাশ গুম করার তিন মাস পর পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে ঘাতক স্বামী মো. আব্দুল কাদের (৪২)।
পুলিশী তৎপরতায় পালিয়ে গিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি তার। একটি কঙ্কাল থেকে লাশের পরিচয় শনাক্ত এবং সে সুত্র ধরে ঘাতককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গত শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) আব্দুল কাদেরকে পানছড়ি থেকে আটক করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মাটিরাঙ্গা থানা পুলিশ।
জানা গেছে, গত ১ আগষ্ট স্থানীয়দের মাধ্যমে প্রাপ্ত সংবাদের ভিত্তিতে মাটিরাঙ্গার বেলছড়ির চোংড়াকাপা এলাকার দুর্গম পাহাড় থেকে এক কঙ্কাল উদ্ধার করে মাটিরাঙ্গা থানা পুলিশ। এ ঘটনায় অজ্ঞাত ব্যাক্তিদের আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন মাটিরাঙ্গা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মোজাম্মেল হোসেন।
ঘটনার পর থেকে আব্দুল কাদেরকে গ্রেপ্তার করতে মাটিরাঙ্গা থানা পুলিশপতেঙ্গা, ইপিজেটসহ চট্টগ্রাম ও খাগড়াছড়ির বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে গত ১২ সেপ্টেম্বর পানছড়ি বাজার থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পর পুলিশের প্রাথমি জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ঘাতক মো. আব্দুল কাদের।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ির চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোরশেদুল আলমের আদালতে হাজির করা হলে হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্ধি প্রদান করেছে বলে জানিয়েছেন মাটিরাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সামছুদ্দিন ভুইয়া।
জবানবন্ধিতে জানা যায়, লক্ষীপুর জেলার কমলনগর উপজেলার তোরাবগঞ্জ গ্রামের মোস্তফা সর্দারের মেয়ে মাইনুর বেগম (২৩) চট্টগ্রামের একটি গার্মেন্টে চাকরি করতো। গার্মেন্টে চাকুরির সুত্র ধরে প্রথমে পরিচয়, প্রেম ও পরে বিয়ে হয় মো. আব্দুল কাদেরের সাথে। বিয়ের পর থেকেই চট্টগ্রামের ফ্রি-পোর্ট মাইলের মাথা এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতো তারা।
রমজানের ঈদ উপলক্ষে গত ৮ জুন স্ত্রী মাইনুর বেগমকে নিয়ে গোমতির বান্দরছড়ায় বোনের বাড়িতে বেড়াতে আসে মো. আব্দুল কাদের। দুই দিন পরে ১০জুন সকাল ১১টার দিকে স্ত্রীকে পাহাড় দেখাতে নিয়ে গেলে একপর্যায়ে আর্থিক বিষয় নিয়ে দুজনের মধ্যে ঝগড়া হলে প্রতিবেশীর বাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়া দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে আব্দুল কাদের। এসময় তার মৃত্যু নিশ্চিত করে চোংড়াকাপার গভীর জঙলে লাশ ফেলে পালিয়ে যায় ঘাতক কাদের।