মিরপুরে ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজের তৃতীয় ও নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে আজ রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) শক্তিশালী আফগানিস্তানের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৬৪ রানের বড় সংগ্রহ করে আফগানিস্তান। জবাবে টপ-অর্ডারের ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় ১৩৯ রানে অল আউট হয় বাংলাদেশ। এতে ২৫ রানের জয় পায় আফগানিস্তান।
শেষ ওভারে দলের ব্যাটসম্যানদের লজ্জা দিয়ে ৬ বলে ১ ছয় ও ২ চারে ১৫ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন মুস্তাফিজুর রহমান। মুস্তাফিজ ধরা পড়লেন বাউন্ডারি সীমানায়। বাংলাদেশ অল আউট হয় ১৩৯ রানে। আফগানিস্তান টাইগারদের ২৫ রানে হারিয়ে টুর্নামেন্টে টানা দ্বিতীয় জয় পেল।
মাহমুদউল্লাহ-সাব্বির জুটি গড়েও ব্যর্থ
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ সাব্বির রহমানকে নিয়ে বেশি দেখে শুনেই খেলছিলেন। কিন্তু ৪৪ রান করা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ছয় হাঁকাতে যেয়ে গুলবেদিন নায়েবের বলে ক্যাচ তুলে ফেরেন।
সাব্বির রহমান খেললেন ধীরগতিতে। ২৭ বল মোকাবিলা করা সাব্বির উইকেটে অনেকক্ষণ থেকেও ইনিংস বড় করতে পারলেন না; আরও বিপদ বাড়িয়ে গেলেন দেশের। ২৭ বল খেলা সাব্বিরের ২৪ রানের ইনিংসে ছিলো একটি মাত্র চার।
টিকলেন না মুশফিক
আগের বলেই মেরেছিলেন দারুণ একটি চার। মুশফিকুর রহিম ফরিদ মালিকের পরের বলটা গেলেন স্কুপ করতে, মিস করে হলেন বোল্ড। ওপেনিংয়ে নেমে মুখোমুখি তৃতীয় বলেই এমন একটি শট খেলা শুধু আত্মঘাতীই নয়, অপরাধের পর্যায়ে পড়ে!
ফিরলেন লিটন
নিজেদের ইনিংস শুরুর দ্বিতীয় বলে সাজঘরের পথ ধরলেন লিটন। মুজিব উর রহমানকে লেগ সাইডে খেলতে চেয়েছিলেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। টপ এজ হয়ে ক্যাচ উঠে যায় কাভারে। ফিরলেন ০ রানে।
নবী ঝড়ে শেষ ১০ ওভারে ১০৪ রান
প্রথম ১০ ওভারে মাত্র ৬০ রান তুলেছিল আফগানিস্তান। শেষ ১০ ওভারে তারা পেল ১০৪ রান। পুরোটা কৃতিত্ব মোহাম্মদ নবীর। ডানহাতি ব্যাটসম্যানের বিস্ফোরক ইনিংসে এলোমেলো বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণ। ডেথ বোলিংয়ে বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণের দূর্বল চিত্র আরও একবার ফুটে উঠল। মাত্র ৫৪ বলে তিন চার ও সাত ছক্কায় ৮৪ রান করেন নবী। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে এটি তার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। সর্বোচ্চ ৮৯ রান করেছিলেন আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ২০১৭ সালে।
সাইফউদ্দিনের ক্যারিয়ারসেরা বোলিং
প্রথম স্পেলে পেয়েছিলেন দুই উইকেট। শেষ স্পেলে বোলিংয়ে এসে পেলেন আরও দুটি। চার ওভারে ৩৩ রানে তার পকেটে গেল চার উইকেট। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে এটি তার সেরা বোলিং। এর আগে দুই উইকেট পেয়েছিলেন একবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে।
সৌম্যর এক ওভারে ২২
প্রথম বল ও শেষ বলে দুই সিঙ্গেল। মাঝের চার বলে দুই চার ও দুই ছক্কা। সৌম্যর করা ১৮তম ওভার থেকে আফগানিস্তান পেল ২২ রান। এখন পর্যন্ত যা আফগানিস্তানের এক ওভারে সর্বোচ্চ।
নবীর দুর্দান্ত হাফ সেঞ্চুরি
সৌম্য সরকারের বল এগিয়ে এসে জায়গা বানিয়ে মিড উইকেট দিয়ে উড়ালেন মোহাম্মদ নবী। ৪৯ থেকে তার রান এক লাফে চলে গেল ৫৫ এ। ৪২ বলে নবী তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট এটি তার চতুর্থ হাফ সেঞ্চুরি। বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম।
সাইফউদ্দিনের চতুর্থ উইকেট
ব্রেক থ্রু এনে দেওয়ার পর নতুন ব্যাটসম্যান গুলবাদিন নাইবকে টিকতে দিলেন না সাইফউদ্দিন। ডানহাতি পেসারের গতির কাছে পরাস্ত হন শূন্য রান করা গুলবাদিন। তার আউটের সময় আফগানিস্তানে রান ছয় উইকেটে ১২২।
ব্রেক থ্রু এনে দিলেন সাইফউদ্দিন
ডানহাতি পেসার সাইফউদ্দিনের স্লোয়ার তুলে মারতে গিয়ে সাব্বিরের হাতে ক্যাচ তোলেন আসগর আফগান। ৩১ রানে নো বলের কল্যাণে জীবন পাওয়ার পর স্কোরবোর্ডে আরও আট রান যোগ করেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। তার আউটের সময় আফগানিস্তানের রান পাঁচ উইকেটে ১১৯। পঞ্চম উইকেটে নবী ও আসগর ৭৯ রানের জুটি গড়েন।
শতরান পেরিয়ে আফগানিস্তান
৫০ বলে দলীয় ৫০ ছুঁয়েছিল আফগানিস্তান। ৫০ থেকে ১০০ যেতে আফগানিস্তানের লাগল মাত্র ৩৭ বল। ১৫তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ছক্কা মেরে দলের রান ৯৫ থেকে ১০১ এ নিয়ে যান আসগর আফগান।
নো বলে জীবন পেলেন আসগর
তাইজুলের বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ দেন আসগর আফগান। জায়গায় দাঁড়িয়ে বল হাতে জমান লিটন। সাজঘরের পথ ধরেছিলেন আসগর। কিন্তু আম্পায়ার তাকে ফিরিয়ে আনলেন। নো বলে জীবন পান আসগর। তখন তার রান ছিল ৩১। ফ্রি হিট অবশ্য কাজে লাগাতে পারেননি নবী। এক রান নেন তিনি।
ঘুরে দাঁড়িয়েছে আফগানিস্তান
পঞ্চম উইকেটে প্রতিরোধ গড়ে তুললেন দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মোহাম্মদ নবী ও আসগর আফগান। ৪৪ বলে তাদের জুটির পঞ্চাশ রান পূর্ণ হয়। ১৩ ওভার শেষে আগফানিস্তানের সংগ্রহ ৯০ রান।
প্রথম অর্ধে এগিয়ে বাংলাদেশ
টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে শুরুটা ভালো হয়নি আফগানিস্তানের। প্রথম দশ ওভারে স্কোরবোর্ডে তুলেছে ৬০ রান। হারিয়েছে গুরুত্বপূর্ণ চার উইকেট। প্রথম অর্ধে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। শেষটা স্বাগতিকরা রাঙাতে পারেন কিনা সেটাই দেখার।
আফগানিস্তানের ৫০ বলে ৫০
তাইজুলের সোজা বল মিড উইকেটে পাঠিয়ে এক রান নিলেন মোহাম্মদ নবী। নবম ওভারের দ্বিতীয় বলে আসা ওই রানে দলীয় ৫০ ছুঁয়ে ফেলে আফগানিস্তান। ৫০ বলে ৫০ রান আফগানিস্তানের। যদিও অতিরিক্ত খাত থেকে তারা পেয়েছে ১৩ রান।
পাওয়ার প্লে’তে দারুণ বাংলাদেশ
নিয়মিত বিরতিতে উইকেট তুলে আফগানিস্তানের রানের চাকায় লাগাম টেনেছেন সাকিব ও সাইফউদ্দিন। পাওয়ার প্লে’তে চার উইকেট তুলে নিয়েছেন তারা। এ সময়ে আফগানরা স্কোরবোর্ডে তুলেছে ৪১ রান।
বিপজ্জনক নজিবুল্লাহ সাজঘরে
সাকিবের অফস্ট্যাম্পের বাইরের বল তুলে মারতে গিয়ে সৌম্যর সহজ ক্যাচে পরিণত হন নজিবুল্লাহ জারদান। আগের ম্যাচে মাত্র ৩০ বলে ৬৯ রান করেছিলেন তিনি। আজ জ্বলে উঠে আগেই সাকিব তার উইকেট তুলে নেন। সাত বলে মাত্র পাঁচ রান আসে তার ব্যাট থেকে। নজিবুল্লাহর আউটের সময় আফগানিস্তানের রান চার উইকেটে ৪০। সাকিবের একটি দ্বিতীয় উইকেট।
প্রতিশোধ নিলেন সাইফ উদ্দিন
প্যাডের ওপরের বল দারুণ টাইমিংয়ে ডিপ মিড উইকেট দিয়ে উড়ালেন নাজিব তারাকাই। মিরপুরের পুরো গ্যালারি অবাক হয়ে দেখল সেই শট। অবাক বোলার সাইফউদ্দিন। এক পর বলই ডানহাতি পেসার নিলেন প্রতিশোধ। প্রায় এক ধরনের ডেলিভারীতে এবার ক্যাচ তোলেন তারাকাই। নিজের জায়গা থেকে পিছনে গিয়ে বল তালুবন্দি করেন সাব্বির। ১৩ বলে ১১ রান করে সাজঘরে ফিরলেন তারাকাই। তার আউটের সময় আফগানিস্তানের রান তিন উইকেটে ১৯।
সাকিব ফেরালেন জাজাইকে
সাকিবের বল ডিপ মিড উইকেট দিয়ে উড়াতে চেয়েছিলেন হজরতউল্লাহ জাজাই। টাইমিংয়ে গড়বড় করে হাওয়ায় বল ভাসান এ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। সহজ ক্যাচে জাজাইকে সাজঘরের পথ দেখান লিটন। সাকিব নিজের প্রথম ওভারেই পেলেন সাফল্য। জাজাই সাজঘরে ফেরার সময় আফগানিস্তানের রান দুই উইকেটে ১০।
প্রথম বলে সাইফউদ্দিনের উইকেট
দারুণ এক সুইং ডেলিভারীতে রহমানুল্লাহ গুরবানজকে বোল্ড করলেন পেসার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। বল হাতে প্রথম বলেই উইকেট। আগের ম্যাচে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ঝড়ো ব্যাটিং করেছিলেন গুরবানজ। আজ প্রথম বলেই গোল্ডেন ডাক।
টস
টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আফগানিস্তানের অধিনায়ক রশিদ খান।
বাংলাদেশ একাদশ: সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), লিটন কুমার দাস, সৌম্য সরকার, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, আফিফ হোসেন, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, সাব্বির রহমান, তাইজুল ইসলাম, সাইফউদ্দিন, মুস্তাফিজুর রহমান।
আফগানিস্তান একাদশ: রাশিদ খান (অধিনায়ক), আসগর আফগান, মোহাম্মদ নবী, হযরতউল্লাহ জাজাই, শরাফুদ্দিন আশরাফ, নাজিবউল্লাহ জাদরান, শহিদউল্লাহ কামাল, ফরিদ আহমেদ মালিক, শফিকউল্লাহ শাফাক, দৌলত জাদরান, নাভিন-উল হক এবং রহমানউল্লাহ গুরবাজ।